রাজনীতির মাঠে মাশরাফি বিন মুর্তজা, সোশ্যাল মিডিয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া

মাশরাফি রাজনীতির মাঠে

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ হতে মনোনয়ন ফরম নিলেন জাতীয় ক্রিকেট দলের ওয়ান ডে ফরম্যাটের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।

আমাদের মনে নানান জিজ্ঞাসা, হঠাৎ মাশরাফি কেন রাজনীতিতে আসলেন? চায়ের দোকান থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে আলোচনা সমালোচনা। মাশরাফি কি ঠিক করলেন? রাজনীতির মাঠে আসা ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মুর্তজা জন্য কতটা যুক্তিযুক্ত হলো? 

আগামী ২৩শে ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন ঘিরে রাজনীতির মাঠ এখন জমজমাট। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফর্ম বিতরণ হচ্ছে উৎসব-মুখর আমেজে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্ট বলেছে তারাও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।

এই আমেজের মধ্যে মাশরাফির আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফর্ম তোলা নিয়ে হাজারো আলোচনা সংবাদ-মাধ্যমে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

সাংসদ পদের ফর্ম তোলা এই কিংবদন্তি ক্রিকেটার নির্বাচনে দাঁড়াবেন নড়াইল-২ আসন থেকে।দীর্ঘদিন ধরেই নড়াইলের সবার চোখের মণি তিনি।

মাশরাফি রাজনীতির মাঠে 

কিন্তু মাশরাফির রাজনীতিতে আসার ঘোষণার পর থেকেই শুরু হয়েছে সমালোচনা, কেন মাশরাফির মতো ভালো লোক রাজনীতিতে আসবেন? তিনি কি জানেন না, বাংলাদেশের রাজনীতি কতটা নোংরা?

এই সমালোচনাগুলো করা কি ঠিক? একটা প্রশ্ন তোলা যেতে পারে যে, খেলা অবস্থায় নির্বাচনে অংশগ্রহণ কি ঠিক হবে! তাঁদের জন্য বলতে পারি, শচীন টেন্ডুলকার ২০১২ সালে এমপি পদে নির্বাচিত হয়েছিল এবং তিনি অবসর নেন ২০১৩ সালে। শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তি জয়াসুরিয়াও একই কাজ করেছিলেন।

মাশরাফির রাজনীতিতে আসা শুধুমাত্র এক শ্রেণীর লোকদের জন্যই সমস্যা হতে পারে। তা হলো কিছু অন্ধ বিপরীত দলীয় সমর্থকগণ যারা চান না মাশরাফির নৌকার হয়ে লড়ুক নির্বাচনে। কিন্তু মাশরাফিকে কি প্রতীক দিয়ে বিচার করা কি আদৌ ঠিক হবে?

আবারো টেস্টে পরাজয়, বাংলাদেশ কি পারবে? পড়তে ক্লিক করুন

আমার তো মনে হয় তিনি বিএনপির হয়ে দাঁড়ালেও একই রকম সম্মান পাবেন। তাহলে সমস্যা কোথায়?

সমস্যা মানসিকতায়। বাঙালি একে অপরের উন্নতি দেখতে পারে না এ কথা তো অনেক পুরোনো। রাজনীতিও মানুষজন ঘৃণা করেন মন থেকে। রাজনীতি ভালো মানুষরা করেন না। রাজনীতি তো কর্দমার কীট থেকেও খারাপ।

পচা ডোবার সাথে তুলনা করা হয় এদেশের রাজনীতিকে। সেই পচা ডোবায় নেমে ডোবা পরিষ্কার করার মতো সাহস দেখান কয়জন?

আমাদের মাশরাফি বিন মুর্তজা

আশরাফুল যেবার ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস এর হয়ে এক ম্যাচ ইচ্ছে করে হেরেছিলেন, সে ম্যাচ মাশরাফি খেলেননি। টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে বলা হয়েছিল, ইচ্ছে করে হেরে যেতে।

মাশরাফি সেই আভাস পেয়ে সে ম্যাচ খেলেননি। যে লোক সেই সময়কার অর্থ-লোভের মোহ থেকে ফিরে আসতে পারেন, সেই লোকের কি রাজনীতিতে আসা ভুল?

আপনাদের কি মনে হয়? বাংলাদেশে কাদের রাজনীতি করা উচিত? চরে মারামারি করা মাঝি থেকে পরিবহন মাফিয়া হওয়া সেই মন্ত্রীর? সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের? কিংবা ইয়াবা ব্যবসা করা নেতাদের?

এই রকম নোংরা রাজনীতিতে যদি একজন ক্লিন ইমেজের মানুষ আসে তাহলে কি সমস্যা? তা যেই প্রতীক হোক।

মাশরাফি যদি নির্বাচিত হোন, তিনি তাঁর এলাকার উন্নয়নের কাজ করবেন এটা অন্তত আমরা বলতে পারি। আর যদি নির্বাচিত নাও হোন, তবুও তাঁর ফাউন্ডেশন কাজ করবে নড়াইল মানুষদের জন্য।

চলুন, এমন একজন মানুষকে রাজনীতিতে ওয়েলকাম জানাই আমরা । তারপর দেখুন কি হয়? অনেক তো মাফিয়া, চোরদের হাতে রাজনীতি চলছে। এবার তো একটা পরিষ্কার হাত আসুক।

এবং সেই হাতটি হোক সবার প্রিয় এবং সর্বজন শ্রদ্ধেয় মাশরাফি বিন মুর্তজা’র হাত, যার হাত ধরে আমরা দেখতে পারবো নতুন স্বপ্ন।

প্রতীকের মাশরাফি বিন মুর্তজাকে সমর্থন দেওয়া লাগবে না, ব্যক্তি মাশরাফিকে দিন।                  

Share this

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top