ডিজিটাল মার্কেটিং কি? কেন? কীভাবে? (ডিজিটাল মার্কেটিং A to Z)

Author:

Published:

Updated:

ডিজিটাল মার্কেটিং কি

ডিজিটাল মার্কেটিং কি? এই প্রশ্নটি এখন আর কারো অজানা না।

ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে ফেসবুক, ইউটিউবে গেলেই এতো বিজ্ঞাপন, সফলতার গল্প, হাজার হাজার ডলার অনলাইনে আয় করার ভিডিও, এতো আলোচনা চারদিকে ছড়িয়ে আছে যে যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করেন, তারা কম বেশি সবাই জানেন ডিজিটাল মার্কেটিং মানে কি। কমন প্রশ্ন কিন্তু দরকার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও সহজ উত্তর।

আজকের এই লেখায় আমি ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে আপনাদের বেসিক আগ্রহগুলোর সঠিক ও তথ্যপূর্ণ সমাধান দেবো। আপনি পেয়ে যাবেন পূর্নাঙ্গ ডিজিটাল মার্কেটিং গাইডলাইন, যা পরবর্তীতে আপনাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হেল্প করবে।   

আমি কথা বলবো ডিজিটাল মার্কেটিং কি? ডিজিটাল মার্কেটিং কেন প্রয়োজন? ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন শাখা প্রকাশা বা ডিজিটাল মার্কেটিং কত ধরণের এই বিষয়গুলো নিয়ে, ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার কেমন? ভবিষ্যৎ কি ইত্যাদি সব বিষয় নিয়ে। 

চলুন তাহলে শুরু করা যাক। 

ডিজিটাল মার্কেটিং কি? ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ কি?   

ডিজিটাল মার্কেটিং কাকে বলে? ডিজিটাল মার্কেটিং হচ্ছে একটা ব্র্যান্ড বা প্রতিষ্ঠানের অনলাইনে কোন প্রোডাক্ট বা সার্ভিস নিয়ে তার সম্ভাব্য কাস্টমারদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি করার এক্টিভিটি। অর্থাৎ অনলাইনে কোন প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্ট, সার্ভিস বা সলিউশনের বাপারে কাস্টমারদের আগ্রহ তৈরি করানোর জন্য ঐ প্রতিষ্ঠান যে যে কাজগুলো করে থাকে সেগুলোকেই ডিজিটাল মার্কেটিং বলে। অনলাইন প্লাটফর্মটি হতে পারে- ফেসবুক, ইউটিউব, লিঙ্কডিন, গুগল ইত্যাদি। আমরা প্রতিনিয়ত ফেসবুক বা ইউটিউবে যে বিজ্ঞাপনগুলো দেখছি সেগুলোই হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং এর উদাহরণ।

ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়টির সাথে খুব সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি টার্ম হচ্ছে- ডিজিটাল মার্কেটিং চ্যানেল।

ডিজিটাল মার্কেটিং চ্যানেল কি? 

একটা প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মার্কেটিং যে যে প্লাটফর্মে করে থাকে সেই প্লাটফর্মগুলকে ডিজিটাল মার্কেটিং চ্যানেল বলে।  যেমন আপনি যদি ফেসবুকে মার্কেটিং করেন তাহলে আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং চ্যানেল হবে ফেসবুক, আপনি যদি ইউটিউবে মার্কেটিং করেন আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং চ্যানেল হবে ইউটিউব।

ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে জানলাম, তাহলে স্বাভাবিক একটি প্রশ্ন আসে- ডিজিটাল মার্কেটিং আসার আগে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যে যে উপায়ে মার্কেটিং করত সেটাকে কি বলে? এটাকে বলে ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং।  

Digital Marketing Channel

ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং কি? 

সাধারণত অনলাইনের বাইরে আপনি মার্কেটিং এর যা কিছু দেখছেন সেসব কিছুই ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং। অর্থাৎ ডিজিটাল মার্কেটিং বা ইন্টারনেট মার্কেটিং আসার আগে একটি প্রতিষ্ঠান যে যে উপায়ে মার্কেটিং করত তা-ই ট্রাডিশিনাল মার্কেটিং। 

যেমন- টেলিভিশন বা রেডিও, সংবাদপত্র, ম্যাগাজিনে বিজ্ঞাপন, লিফলেট, ব্যানার ইত্যাদি হল ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং এর উদাহরণ। 

এবার আমরা জানবো ডিজিটাল মার্কেটিং কত ধরণের হয় এবং সেগুলো কি কি?

ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রধান স্তম্ভ কয়টি?

ডিজিটাল মার্কেটিংকে প্রাথমিকভাবে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথমটি হচ্ছে অর্গানিক মার্কেটিং এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে পেইড মার্কেটিং।

অর্গানিক মার্কেটিং কি? 

যখন কোন প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ ফ্রিতে ডিজিটাল মিডিয়াগুলো ব্যবহার করে মার্কেটিং করে, তাহলে এই ধরণের মার্কেটিংকে অর্গানিক মার্কেটিং বলে। 

অর্থাৎ আপনি মার্কেটিং করার জন্য ঐ ডিজিটাল প্লাটফর্মকে কোন টাকা দিচ্ছেন না, আপনি কনটেন্ট তৈরি করে শুধু কনটেন্ট ডিজিটাল মিডিয়াতে পাবলিশ করে দিচ্ছেন আর তাতেই আপনি হাজার হাজার ভিজিটর পেয়ে যাচ্ছেন, কাস্টমার তৈরি হচ্ছে। 

আপনার একটা ফেসবুক পেইজ আছে বা ইউটিউব চ্যানেল আছে। আপনি দারুণ একটি ভিডিও তৈরি করে আপনার ফেসবুক পেইজে বা ইউটিউব চ্যানেলে পাবলিশ করে প্রোডাক্ট সার্ভিস নিয়ে যে মার্কেটিং করছেন সেটাকেই আমরা বলতে পারি অর্গানিক মার্কেটিং। 

তাহলে এবার জেনে আসা যাক, পেইড মার্কেটিং বা পেইড এডভার্টাইজমেন্ট নিয়ে। 

পেইড মার্কেটিং কি?  

আপনি আপনার কনটেন্টকে লাখ লাখ মানুষের কাছে পৌছাতে চান, কিন্তু আপনি আপনার ফেসবুক পেইজ বা ইউটিউবে কোন কনটেন্ট পাবলিশ করলে এতো মানুষের কাছে পৌঁছায় না। তাহলে উপায়? 

উপায় হচ্ছে আপনি ফেসবুকে ডলার দিয়ে বলবেন আপনার কনটেন্টটা যাতে আপনার টার্গেট অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছে দেয়। 

আপনি যত বেশি টাকা ফেসবুককে পে করবেন তত বেশি মানুষের কাছে ফেসবুক আপনার কনটেন্টকে পৌঁছে দিবে। 

অর্থাৎ এখানে আপনি মার্কেটিং করছেন সম্পূর্ণ টাকা দিয়ে। 

আমরা আমাদের আশেপাশে যে বুস্টিং করা বা বুস্ট করা এই টার্মগুল শুনি এগুলোই হচ্ছে পেইড মার্কেটিং।

পেইড এবং অর্গানিক মার্কেটিং ছাড়া আমরা যদি প্লাটফর্ম বা ডিজিটাল মার্কেটিং চ্যানেল হিসেবে ভাবি তাহলে ডিজিটাল মার্কেটিং আবার কয়েক ধরণের হয়।

ডিজিটাল মার্কেটিং কত প্রকার ও কি কি? 

ডিজিটাল মার্কেটিং বিভিন্ন ধরণের হয়। এটা নির্ভর করে ডিজিটাল মার্কেটিং চ্যানেলের উপর। তাহলে জেনে আসা যাক, ডিজিটাল মার্কেটিং কত প্রকার ও কি কি? 

১. সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং | SMM 

২. সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং | SEM

৩. সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন | SEO

৪. ইমেইল মার্কেটিং | Email Marketing.

৫. কনটেন্ট মার্কেটিং | Content Marketing 

৬. ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং | Influencer Marketing

৭. অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং | Affiliate Marketing

Types of digital Marketing

১. সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি? SMM কি?

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং হচ্ছে কোন ব্রান্ড বা অর্গানাইজেশন যদি তাদের পণ্যের প্রচারের মাধ্যম হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে তখন তাকে আমরা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বা এসএমএম বলবো।

যেমন- ফেসবুকে, ইন্সটাগ্রাম বা লিঙ্কেডিনে মার্কেটিংকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বলে। 

২. সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং কি? SEM কি?

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং হল কোন প্রতিষ্ঠান যদি তাদের মার্কেটিং চ্যানেল হিসেবে সার্চ ইঞ্জিনকে ব্যবহার করে তাহলে এই মার্কেটিংকে আমরা বলবো সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং। 

বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন হচ্ছে গুগল। আরেকটা জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন হচ্ছে বিং। 

কোন প্রতিষ্ঠান যখন গুগল বা বিংকে কেন্দ্র করে তাদের মার্কেটিং পরিচালনা করে বা এখান থেকে ওয়েবসাইটে ভিজিটর নিয়ে আসে এবং সেই ভিজিটরকে কাস্টমারে পরিনত করে তখন তাকে আমরা সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং বলতে পারি।

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং দুই ধরণের হয়- 

১. সার্চ ইঞ্জিন এডভারটাইজিং

২. সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও

সার্চ ইঞ্জিন এডভারটাইজিং কি? 

সার্চ ইঞ্জিনে যখন আপনি পেইড বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আপনার প্রতিষ্ঠানের প্রচার প্রচারনা চালাবেন তখন তাকে আমরা সার্চ ইঞ্জিন এডভারটাইজিং বলে। যেমন- গুগল সার্চ অ্যাড, বিং সার্চ অ্যাড।

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন কি বা এসইও কি?

সার্চ ইঞ্জিনে কোন নির্দিষ্ট কিওয়ার্ড টার্গেট করে আপনার ওয়েবসাইটে কনটেন্ট লিখে সেই কনটেন্টকে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পাতায় নিয়ে আসার জন্য যে যে কাজগুলো করছেন সেগুলোকে সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাজেশন বলে। সংক্ষেপে আমরা সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাজেশনকে এসইও বলে থাকি। 

৩. ইমেইল মার্কেটিং কি? 

কোন প্রতিষ্ঠান যখন তার কাস্টমার বা সম্ভাব্য কাস্টমাদের সাথে ইমেইলের মাধ্যমে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সম্পর্কে আগ্রহ তৈরি করে অথবা ব্রান্ডিং করে তখন তাকে ইমেইল মার্কেটিং বলে। ইমেইল মার্কেটিং করতে হলে আপনাকে প্রথমে কাস্টমারদের বা সম্ভাব্য কাস্টমারদের ইমেইল সংগ্রহ করতে হবে। এরপর কোন একটা ইমেইল মার্কেটিং সফটওয়্যার ব্যবহার করে ইমেইল মার্কেটিং করতে হয়। 

যেমন খুব জনপ্রিয় একটি ইমেইল মার্কেটিং সফটওয়্যার হচ্ছে- মেইলচিম্প। 

৪. কনটেন্ট মার্কেটিং কি?

কনটেন্ট মার্কেটিং হচ্ছে এমন একটু মার্কেটিং এপ্রোচ যেখানে একটি প্রতিষ্ঠান টার্গেট কাস্টমারদের পেইনপয়েন্টগুলো হাইলাইট করে সেই সমস্যাগুলোর সমাধান নিয়ে প্রচুর পরিমাণে ফ্রি কনটেন্ট তাদের সবগুলো ডিজিটাল মিডিয়াতে উন্মুক্ত করে দেয়। যেহেতু এই কনটেন্টগুলো মানুষকে হেল্প করার জন্য তৈরি এবং হাইলি রিসোর্সফুল তাই এগুলো অডিয়েন্স নিয়েরাই শেয়ার করে বিভিন্ন তাদের নিজেদের ডিজিটাল মিডিয়াগুলতে। এর ফলে কোন ধরণের পেইড ক্যাম্পেইন না করেও খুব ভাল পরিমাণ ব্রান্ডিং হয় ঐ প্রতিষ্ঠানের। ব্র্যান্ডের প্রতি সাধারণ মানুষের খুব ভাল পরিমাণ একটা আস্থা তৈরি হয়। যা তাদেরকে পরবর্তীতে ঐ ব্রান্ডের কোন প্রোডাক্ট বা সার্ভিস কিনতে উৎসাহী করে তোলে অডিয়েন্সকে।

৫. ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং কি?

যখন কোন প্রতিষ্ঠান তাদের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস কোন একজন ডিজিটাল ইনফ্লিয়েন্সারের মাধ্যমে ডিজিটাল মিডিয়াগুলতে প্রমোট করে তখন তাকে ইনফ্লিয়েস্নার মার্কেটিং বলে। 

এক্ষেত্রে ইনফ্লুয়েন্সারদের প্রচুর পরিমাণ ফ্যান ফলোয়ার থাকতে হয়। এই ফ্যানবেজ যে ব্রান্ডের প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের সাথে ম্যাচ করে, তারাই এই ইনফ্লুয়েন্সারকে তাদের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস প্রমোট করতে ব্যবহার করবে।

উদাহরণস্বরূপ আপনারা ফেসবুক বা ইউটিউবে বিভিন্ন সময়ে অনেক জনপ্রিয় মানুষজনকে কোন প্রোডাক্ট বা সার্ভিস প্রমোট করতে দেখেন।   

৬. অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং কি? কীভাবে অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং করে? 

অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে এমন একটি মার্কেটিং প্রক্রিয়া যেখানে যে কেউ চাইলে একটা প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস অনলাইনে নিজের চ্যানেলের মাধ্যমে বিক্রি করে দিয়ে সেই প্রোডাক্টের বিক্রিত প্রাইজ থেকে একটা নির্দিষ্ট অংশের কমিশন লাভ করা।

ধরুন একটা প্রতিষ্ঠান সাইকেল বিক্রি করে, আপনি ঐ প্রতিষ্ঠানের অ্যাফেলিয়েট পার্টনার হয়ে আপনার ইউটিউব চ্যানেলে বা ফেসবুকে এই সাইকেল নিয়ে একটা খুব সুন্দর রিভিউ পোস্ট করলেন। ভিডিওর সাথে একটা লিংকও দিয়ে দিলেন- যদি কেউ এই সাইকেলটি কিনতে চায়, তারা এই লিংক থেকে গিয়ে কিনে নিতে পারবে। 

ধরলাম আপনার রিভিউ দেখে ১০ জন মানুষ আপনার দেওয়া লিংক থেকে গিয়ে সাইকেল কিনে নিলো। প্রতিটা সাইকেলের দাম ১৫০০০ টাকা। এই প্রতিষ্ঠান অ্যাফেলিয়েট পার্টনারদের সাথে কমিশন শেয়ার করে ১০%। অর্থাৎ আপনি একটা সাইকেল বিক্রি করে দিলে পাবেন ১৫০০ টাকা। তাহলে ১০ জনের কাছে সাইকেল বিক্রি করে দিয়ে ইনকাম করলেন ১৫০০০ টাকা। 

অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং খুবই জনপ্রিয় একটি মার্কেটিং মডেল। এতে দুই পক্ষই লাভবান হতে পারে। 

সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং প্লাটফর্ম হচ্ছে- অ্যামাজন অ্যাফেলিয়েট মার্কেটিং। একজন অ্যাফেলিয়েট মার্কেটার অ্যামাজনের প্রোডাক্টের রিভিল লিখে তার ওয়েবসাইটে পাবলিশ করে সার্চ ইঞ্জিন থেকে ভিজিটর নিয়ে আসে। ভিজিটরটা রিভিউ আর্টিকেল পড়ে সাথে অ্যাটাচ করা লিংক থেকে গিয়ে প্রোডাক্ট কিনে নিলে প্রতিটা বিক্রিত প্রোডাক্ট থেকে অ্যাফেলিয়েট কমিশন পেয়ে যান- অ্যাফেলিয়েট মার্কেটার। 

একজন মার্কেটিং করে প্রতিমাসে ৫০০ ডলার থেকে শুরু করে ৫০০০ ডলার পর্যন্ত অনায়াসে ইনকাম করা যায়। 

ডিজিটাল মার্কেটিং কেন প্রয়োজন? ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব বা সুবিধা কি? 

ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং এর তুলনায় ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব বলে শেষ করা যাবে না। ডিজিটাল মার্কেটিং কেন প্রয়োজন, ডিজিটাল মার্কেটিং এর সুবিধা কি তা অল্প কথায় কয়েকটি পয়েন্ট আকারে তুলে ধরা হল। 

  • কম খরচ: ডিজিটাল মার্কেটিং এর খরচ ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং এর তুলনায় খুবই কম। ঠিকভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং করতে পারলে আপনার ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং এ যে খরচ হয় তার দশ ভাগের একভাগ খরচ করে, তার চেয়ে অনেক ভাল ফলাফল পাওয়া সম্ভব। 
  • টার্গেট অডিয়েন্স: ডিজিটাল মার্কেটিং এ কোন ভুল মানুষের কাছে মার্কেটিং এফোর্ড যাবে না, আপনি ফোকাস টার্গেটিং ব্যবহার করে শুধুমাত্র যে মানুষগুলো আপনার সম্ভাব্য কাস্টমার হতে পারে, শুধু তাদের টার্গেট করা যায়। এখানে অডিয়েন্স টার্গেট করা খুব সহজ ও ইফেক্টিভ।
  • বড় মার্কেট: ট্রাডিশিনাল বিসনেসে ব্যবহার কাস্টমার এরিয়া খুব ছোট হয়। কিন্তু ডিজিটাল বিস্নেসে আপনি বাংলাদেশে বসে চাইলে অ্যামেরিয়ার মার্কেটে ব্যবসা করতে পারেন। এখানে মার্কেট সাইজ বিশাল। 
  • কম আয়োজন: একটা ট্রাডিশিনাল মার্কেটিং ক্যাম্পেইন করতে গেলে বেশ বড় বাজেট ও বেশ বড় আয়োজন করতে হয়, যেখানে অনেকগুলো মানুষ কানেক্টেড থাকে। কিন্তু ডিজিটাল মার্কেটিং শুধু মাত্র ওয়ান ম্যান আর্মি দিয়েও সম্ভব। মোটকথা এখানে আপনার অনেকগুলো মানুষ, অনেক বড় বাজেট না থাকেলেও আপনার পক্ষে সম্ভব মার্কেটিং করা।
  • ছোট ও মাঝারি সাইজ বিসনেস: ট্র্যাডিশনাল মার্কেটিং এ অনেক বড় বাজেট নিয়ে নামতে হয়, যা ছোট সাজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে একেবারেই সম্ভব হয় না মার্কেটিং করা। ফলে এই ধরণের ব্যবসা বড় আকারে যাওয়াটা প্রায় অসম্ভব। কিন্তু ডিজিটাল মার্কেটিং এ আপনি খুবই অল্প পরিমাণ বাজেট নিয়েও মার্কেটিং শুরু করতে পারেন। বর্তমানে এমন কি একটা ছোট রেস্টুরেন্ট বা চায়ের দোকানও চাইলে ডিজিটাল মার্কেটিং করে তাদের ব্যবসাকে পরের ধাপে নিয়ে যেতে পারে। তার মানে ছোট ও মাঝারি সাইজের বিসনেসগুল ডিজিটাল মার্কেটিং করে ব্যবসাকে বড় পরিসরে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। 
  • রিয়েল টাইম কাস্টমার ফিডব্যাক: ডিজিটাল মার্কেটিং এ আপনার ব্র্যান্ডের সাথে কাস্টমারের কমিনুকেশন ওয়ান টু ওয়ান। যার ফুলে আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস নিয়ে কাস্টমার কি ভাবছে, তাদের ফিডব্যাক খুব সহজেই আপনি পেয়ে যাচ্ছেন আপনার ডিজিটাল চ্যানেল্গুলর মাধ্যমে। 
  • রিয়েল টাইম ক্যাম্পেইন রেজাল্ট: কোন একটা মার্কেটিং ক্যাপেইন শুরু করার পর প্রতি মুহূর্তে আপনি এই ক্যাম্পেইনের ফলাফল দেখার সুযোগ পাচ্ছেন। ক্যাম্পেইন থেকে কেমন হারে রেজাল্ট আসছে তা প্রতিনিয়ত দেখার সুযোগ পাচ্ছেন। ফলে আপনার পক্ষে সম্ভব ক্যাম্পেইনকে আরও নিখুতভাবে অপ্টিমাইজ করে আরও ভাল ফলাফল নিয়ে আসা। 
  • ভার্চুয়াল বিসনেস: একটা ব্যাবসা শুরু করতে অনেকগুলো লোক, স্থান ও আরও অনেক লজিস্টিং সাপোর্ট দরকার হয়। কিন্তু আপনি চাইলে ডিজিটাল বিসনেসকে সম্পূর্ণ ভার্চুয়ালি ম্যানেজ করতে পারেন আপনার ঘর থেকেই। যখন একটু একটু করে বিসনেস বড় হবে তখন সবকিছু গুছিয়ে নিতে পারেন। 

ডিজিটাল মার্কেটিং কোথায় করবো? কীভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং করবো?

ডিজিটাল মার্কেটিং কোথায় করবেন কীভাবে করবেন এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের উপর। আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের ধরন অনুয়ায়ি আপনাকে প্রথমে একটা মার্কেটিং স্ট্রাটেজিক প্ল্যান করে নিতে হবে। এই মার্কেটিং প্ল্যান করার জন্য অবশ্যই আপনার প্রোডাক্টের সবগুলো বিষয়কে মাথায় রেখে টার্গেট অডিয়েন্স ঠিক করে নিতে হবে। এর পর আপনার সেই টার্গেট অডিয়েন্সকে কোথায় কোথাও ডিজিটালি পাওয়া যেতে পারে সেগুলো নিয়ে রিসার্চ করে বের করে আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং চ্যানেল ঠিক করে নিতে হবে। এর পর প্রতিটা চ্যানেল অনুয়ায়ি আলাদাভাবে চ্যানেলের অ্যালগরিদমকে মাথায় রেখে আপনার অডিয়েন্সের পছন্দ অপছন্দ অনুয়ায়ি আপনাকে কনটেন্ট তৈরি করে সেগুলোকে প্রপার ওয়েতে ডিস্ট্রিবিউট করতে হবে। 

আপনি যদি নিজে এই কাজটি করতে না পারেন তাহলে একজন প্রফেশনাল ডিজিটাল মার্কেটার হায়ার করে নিতে পারেন, যে আপনার হয়ে এই কাজটি করে দিবে। এক্ষেত্রে আমার রেকমেন্ডেশন হচ্ছে বাংলাদেশের অন্যতম অভিজ্ঞ প্রফেশনাল ডিজিটাল মার্কেটার সাইফুল্লাহ সাইফ। উনি বিবিসিসহ বাংলাদেশের অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠানের জন্য মার্কেটিং স্ট্রাটেজি তৈরি করেছেন এবং নিয়মিত ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে কন্সাল্টেন্সি করছেন।  

ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ

১. ব্যবসার ক্ষেত্রে ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ

সময়টা এখন ডিজিটালের। বর্তমানে মানুষ সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় ইন্টারনেটে। উন্নত দেশগুলোর মতো দিন দিন মানুষের কেনাকাটার সাইকোলজিতেও একের পর এক পরিবর্তন আসছে। একটু খেয়াল করলে বুঝবেন, প্রথম প্রথম অনলাইন থেকে কেউ কেনাকাটা করতে চাইত না, কিন্তু বর্তমানে লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রতিদিন অনলাইন থেকে কেনাকাটা করছে। অনলাইন থেকে কেনাকাটা করা হচ্ছে মোবাইল ফোনে কয়েকটা বাটনের খেলা। আপনি যদি এই ডিজিটাল জোয়ারে আপনার ব্যবসার তৈরি ভাসাতে না পারেন, তাহলে নিশ্চিত আপনি পিছিয়ে যাচ্ছেন। 

খুব বেশি দূরে নয়, একসময় মানুষ তাদের দৈনন্দিন সব কেনাকাটাও অনলাইন থেকে করবে। বাজারে গিয়ে ভিড়ের মধ্যে, গরমের মধ্যে, কষ্ট করে আসা যাওয়া, সময় নষ্ট, পরিশ্রম- সব কিছুর একসাথে সবাধান পেয়ে যাচ্ছে অনলাইন থেকে কেনাকাটা করে।

তাছাড়া বাংলাদেশের যেখানে খুশি বসে যে কোন প্রান্ত থেকে আপনি যেকোন কিছু কিনে নিতে পারছেন অনলাইনে। এতো সুবিধা পাওয়ার পরেও কেন মানুষ কষ্ট করতে যাবে?

আপনি যদি ব্যবসায়ী হয়ে থাকেন, তাহলে দয়াকরে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সুবিধাগুল আরেকবার পড়ে আসুন। বুঝে যাবেন, ব্যবসায়ীদের জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ কি।

এছাড়া আপনি যদি একজন ডিজিটাল উদ্যোক্তা হয়ে থাকেন, যেমন ফেসবক পেইজের মাধ্যমে আপনি আপনার প্রোডাক্ট বিক্রি করছেন বা ইউটিউববের মাধ্যমে বিক্রি করছেন, সেক্ষেত্রে খুব ভাল করে ডিজিটাল মার্কেটিং জেনে আপনি সহজেই আপনার ব্যবসাকে আরও কয়েকগুন বড় করে ফেলার সুযোগ পাচ্ছেন। আপনাকে শিখতে হবে- অর্গানিক মার্কেটিং, পেইড মার্কেটিং, কনটেন্ট ক্রিয়েশন ইত্যাদি।  

২. ক্যারিয়ার হিসেবে ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎঃ ডিজিটাল মার্কেটিং করে আয়

ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ারঃ চাকরি

ডিজিটাল মার্কেটিং বাংলাদেশে তুলনামুলকভাবে নতুন ইন্ডাস্ট্রি। এখনো এই প্রফেশনে খুব বেশি মানুষ আসে নি। যারা ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ করছে তাদের বেশিরভাগ ব্যাসিক ডিজিটাল মার্কেটিং পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। কর্পোরেট হাউজগুলো খুব ভাল মানের ডিজিটাল মার্কেটার খুঁজে পাচ্ছে না। আপনি যদি খুব ভাল করে এই স্কিলটা রপ্ত করতে পারেন তাহলে নিশ্চিতভাবে আপনি যেকোন বড় প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে পারেন। 

তবে কর্পোরেট জবে ভাল করতে হলে, ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ারে খুব সাফল্য পেতে হলে- আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং স্কিল খুব ভাল হওয়ার পাশাপাশি আরও যে বিষয়গুলো দরকার- 

  • কমিউনিকেশন স্কিল
  • ইংলিশ
  • ক্রিয়েটিভিটি
  • গ্রাজুয়েশন

ডিজিটাল মার্কেটিং ফ্রিল্যাসিং ক্যারিয়ার

ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে আপনার জন্য অনলাইন থেকে টাকা আয় করার সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং। ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে আপনি যে কোন একটা পার্টিকুলার বিষয় নিয়ে শুরু করতে পারেন আপনার ফ্রিল্যাসিং যাত্রা। ফ্রিল্যাসিং করার জন্য বেশকিছু জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস আছে। তারমধ্যে ফাইবার ও আপয়ার্ক অন্যতম। ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে আপনি অনলাইনে আয় করা শুরু করতে পারেন ফাইবারে। ফাইবার তুলনামুলকভাবে বিগিনারদের জন্য ভাল। আপনি যদি ভাল অভিজ্ঞ হয়ে যান, তখন ফাইবারের পাশাপাশি ফ্রিল্যাসিং শুরু করতে পারেন আপওয়ার্কে। তবে এখানে তুলনামুলকভাবে আপনাকে একটি বেশি প্রফেশনাল হয়ে যাওয়া উচিত।

এছাড়া আপওয়ার্ক, ফাইবার ছাড়াও আপনি চাইলে মার্কেটপ্লেসের বাইরে ফ্রিল্যাসিং করে টাকা আয় করতে পারেন। যেমন আপনার পরিচিত মানুষজনকে ডিজিটাল মার্কেটিং সার্ভিস দিয়ে, লিঙ্কেডিন থেকে বায়ার ম্যানেজ করে। 

ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার উপায়ঃ ডিজিটাল মার্কেটিং কীভাবে শিখবো? 

ডিজিটাল মার্কেটিং একটি বেশ বড় ইন্ডাস্ট্রি। একদিনে বা একমাসে এতো কিছু শেখা কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। প্রথমে আপনি যেকোন একটা স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউট থেকে ব্যাসিক ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে নিতে পারেন। এখান থেকে খুব বেশি কিছু আশা করাটা ঠিক হবে না। কারণ এই কোর্সের মধ্যে দিয়ে সবেমাত্র আপনি যাত্রা শুরু করেছেন। তবে ভাল প্রতিষ্ঠান থেকে বেসিক ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স করেও আপনি অনলাইন থেকে টাকা আয় করা শুরু করে দিতে পারেন। 

বেসিক ডিজিটাল মার্কেটিং এ আপনি মুলত ডিজিটাল মার্কেটিং কি? ডিজিটাল মার্কেটিং কীভাবে কাজ করে? ডিজিটাল মার্কেটিং কত প্রকার ও কি কি? ইত্যাদি ওভারঅল ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে একটা ধারণা পেয়ে যাবেন। সবগুলো শাখা প্রকাশা নিয়ে জানবেন। এবার আপনার পালা এডভান্সড ডিজিটাল মার্কেটিং শেখা। 

আপনি বেসিক ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার পর বুঝতে পারবেন ডিজিটাল মার্কেটিং এর কোন সেকশন আপনার সবেচেয়ে বেশি ভাল লাগে- শিখতে, কাজ করতে। 

ধরে নিলাম আপনি এসইও ভাল বুঝেন ও কাজ করতে পারেন। এখন আপনাকে এসইও নিয়ে পড়ে থাকতে হবে, প্রচুর কাজ করতে হবে, শিখে যেতে হবে। আপনি এডভান্সড এসইও নিয়ে কোন অভিজ্ঞ মেন্টরের তত্ত্বাবধানে একটি ভাল কোর্স করে এসইওর এডভান্সড বিষয় গুলো শিখে নিতে পারেন। এরপর আপনার কাজ হচ্ছে প্রচুর পরিমানে এসইও নিয়ে কাজ করা।

ফ্রি ডিজিটাল মার্কেটিং ফাউন্ডেশন কোর্স

ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে আপনার যদি আরও বেশি আগ্রহ থাকে তাহলে স্কিলোরের এই ফ্রি ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স (ফাউন্ডেশন কোর্স) সম্পূর্ণ করে ফেলুন। ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে আপনার বেসিক ধারণা তৈরি হয়ে যাবে। এখানে একটা প্লেলিস্ট আছে। প্লেলিস্ট থেকে প্রতিটা ভিডিও দেখে ফেলুন।



ডিজিটাল মার্কেটিং কি কি শেখানো হয়?

ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্সগুলতে সাধারণত যে টপিকগুলো শেখানো হয় তা হল- 

১. ডিজিটাল মার্কেটিং ওভারভিউ

২. সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

৩. সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং

৪. সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন

৫. ইমেইল মার্কেটিং

৬. কনটেন্ট মার্কেটিং 

মোটামুটি ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে একটা ওভারঅল ধারণা পাবেন বেসিক ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্সগুলতে। বেসিক কোর্স শিখে তারপর যেকোন একটি টপিকে আপনাকে এডভান্সড স্কিল অর্জন করতে হবে।

ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কিছু কমন প্রশ্ন

ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে কতদিন লাগে?

ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে কত দিন লাগবে এটা অনেক কিছুর উপর নির্ভর করে। প্রথমত আপনি কত দ্রুত শিখতে পারেন, দ্বিতীয়ত ইন্টারনেট ব্রাউজিং বা কম্পিউটার চালানোতে আপনি কতটা পারদর্শী, আপনার ইংলিশ দক্ষতা (পড়তে, লিখতে, বুঝতে) কেমন, আপনি দৈনিক কত ঘন্টা সময় ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার পেছনে দিচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে যদি আপনি অন্তত প্রতিদিন চার পাঁচ ঘন্টা ডিজিটাল মার্কেটিং শেখা ও প্র্যাকটিস করার জন্য ব্যয় করতে পারেন, তাহলে মোটামুটি ৪ থেকে ৬ মাসের মধ্যে আপনি আপনার দক্ষতা এমন এক যায়গায় নিয়ে যেতে পারবেন যেটা দিয়ে আপনি অনলাইন থেকে ফ্রিল্যাসিং করে একটা ভাল এমাউন্ট আয় করতে পারবেন। 

মোবাইল দিয়ে কি ডিজিটাল মার্কেটিং করা যায়?

না, বিভিন্ন চটকদার বিজ্ঞাপনগুলোতে হয়ত আপনি দেখে থাকবেন এই ধরণের কথা বলে যে মোবাইল দিয়ে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে কাজ করা যায়। কিন্তু সত্যটা হচ্ছে- অসম্ভব। আপনি হয়ত দুই একটা ছোট খাটো কাজ করতে পারেন, যেটা আসলে বলার মতো কিছু না।

ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে কত দিনে অনলাইন থেকে আর করা যায়?

এটা নির্ভর করে আপনার বেসিক দক্ষতা ও ক্যাপাবিলিটির উপর। কেউ কেউ ২ দিন মাসেও ইনকাম শুরু করে দিতে পারে আবার কারো কারো ক্ষেত্রে ৬ মাস বা ১ বছরও লেগে যেতে পারে। তবে আপনি যদি ডেডেকেটেড থাকেন তাহলে বলা যায় প্রথম ৬ মাসের মধ্যেই ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে অনলাইন থেকে আয় করতে পারবেন। 

Who is the Best Digital Marketer In Bangladesh? বাংলাদেশের সেরা ডিজিটাল মার্কেটার কে?

সাইফুল্লাহ সাইফ বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা একজন ডিজিটাল মার্কেটার। তিনি গত ৬-৭ বছর ধরে এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন। বিবিসি বাংলা, বাংলা ট্রিবিউন, কোডার্স্ট্রাস্টসহ বেশ বড় বড় অনেক প্রতিষ্ঠানে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে তার। তিনি তার ইউনিক স্ট্রাটেজি, লেটেস্ট ডিজিটাল মার্কেটিং ট্রেন্ড দিয়ে অনেক প্রতিষ্ঠানকে গ্রো করতে হেল্প করেছেন। তিনি বাংলাদেশের অন্যতম বড় একটি ইউটিউব চ্যানেল পাই ফিঙ্গার্স মোটিভেশনের ফাউন্ডার। এছাড়া এডভারটাইজিং এজেন্সি CubixCrew এবং ই লার্নিং প্লাটফর্ম Skilloar এর প্রতিষ্ঠাতা। তিনি একজন ডিজিটাল মার্কেটিং মেন্টর। প্রায় ১০০০ এর অধিক স্টুডেন্টদের তিনি ডিজিটাল মার্কেটিং, এসইও, লোকাল এসইও শিখিয়েছেন। 

ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে কি কি লাগে? 

ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে বা কাজ করতে আপনার কয়েকটা বিষয় অবশ্যই লাগবে। ১. দ্রুত গতির ইন্টারনেট ২. একটা মোটামুটি ভাল কনফিগারেশনের কম্পিউটার (ল্যাপটপ), ৩. বেসিক ইংলিশ দক্ষতা ৪. বেসিক ইন্টারনেট ব্রাউজিং দক্ষতা ৫. ধৈর্য ৬. মানুষের সাইকোলজির প্রতি আগ্রহ ৭. একজন ভাল মেন্টর যে আপনাকে এগিয়ে যাওয়ার গাইডলাইন দিবে।

উপসংহার

সময়ের সাথে সাথে নতুন নতুন প্রযুক্তি ও আইডিয়ার সাথে নিজেকে একজন মানুষ যত বেশি খাপ খাওয়াতে পারে সেই তত বেশি সফল হয়। ডিজিটাল মার্কেটিং আপনার জীবন বদলে দিতে পারে, কিন্তু সবকিছুর জন্য দরকার সময়। আপনার হাতে কি পর্যাপ্ত সময় আছে ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার? 

মনে রাখতে হবে ডিজিটাল মার্কেটিং একটা স্কিল। আপনি যত বেশি সময় দিয়ে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখবেন তত দ্রুত আপনার ক্যারিয়ারে উন্নতির দিকে যাবেন। কিন্তু শর্টকার্ট বলতে কিছু নেই। 

আশা করি ডিজিটাল মার্কেটিং কি? ডিজিটাল মার্কেটিং কীভাবে কাজ করে? ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার ইত্যাদি সম্পর্কে খুব ভাল একটা ধারণা হয়েছে আপনাদের। ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে শীঘ্রই আমরা আরও কনটেন্ট পাবলিশ করবো। 

আপনি যদি আরও আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে- আপনার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে একটি বেসিক কোর্স সম্পূর্ণ ফ্রিতে দেওয়া আছে এখানে। এই কোর্সটি দেখে ফেলুন। আরও অনেক কিছু জানতে পারবেন ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে। 

আজ এই পর্যন্তই। ভাল থাকবেন সবাই। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Latest posts

  • সর্দি থেকে মুক্তির উপায়, নাকের এলার্জি দূর করার উপায় | দ্রুত উপশম পেতে ঘরোয়া চিকিৎসা

    সর্দি থেকে মুক্তির উপায়, নাকের এলার্জি দূর করার উপায় | দ্রুত উপশম পেতে ঘরোয়া চিকিৎসা

    নাকের এলার্জি হচ্ছে নাকের ঝিল্লি প্রদাহের কারণে নাকের একটি সমস্যা। এটি সারা বিশ্বব্যাপী একটি স্বাস্থ্য সমস্যা। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ নাকের এই রোগে আক্রান্ত। নাকের এলার্জি কোন মারাত্মক ক্ষতিকর রোগ না হলেও এ রোগের কারণে দৈনন্দিন জীবন প্রবাহ ব্যাহত হয়। এলার্জিজনিত সর্দি এবং হাঁচি জীবনকে অতিষ্ট করে তোলে। এই রোগে হঠাৎ…

    Read more

  • কফ, কাশি দূর করার উপায় | সঠিক চিকিৎসাই হতে পারে কাশি দূরীকরণের মাধ্যম

    কফ, কাশি দূর করার উপায় | সঠিক চিকিৎসাই হতে পারে কাশি দূরীকরণের মাধ্যম

    গলায় বুকে কফ জমে থাকা বেশ বিরক্তিকর একটি সমস্যা। ঋতু পরিবর্তনের ফলে আবহাওয়া পরিবর্তন হয়। আর আবহাওয়ার এই দ্রুত পরিবর্তন আমাদের শরীর খাপ খাওয়াতে পারে না, যার কারণে সৃষ্টি হয় ঠান্ডা জ্বর ও সর্দি-কাশির। ঠান্ডা সর্দি কাশি এগুলো আমাদের কাছে খুব পরিচিত রোগ হলেও এই ঠান্ডা সর্দি কাশি থেকে আমাদের দেহে অনেক বড় বড় অসুখ…

    Read more

  • ওজন কমানোর উপায় ডায়েট চার্ট | সুস্থ স্বাভাবিক জীবন

    ওজন কমানোর উপায় ডায়েট চার্ট | সুস্থ স্বাভাবিক জীবন

    সুস্থ স্বাভাবিক এবং রোগমুক্ত জীবন আমরা কে না চাই। আর এই সুস্থ সুন্দর জীবন যাপন করার একমাত্র উপায় হচ্ছে শারীরিক ওজন ঠিক রাখা। কেননা ওজন বেড়ে গেলে যে কোন রোগের ঝুঁকি ও বেড়ে যায়। এজন্য বাড়তি ওজন অনেকের মানসিক অসুস্থির প্রধান কারণ। তাই রোগ প্রকোপ কমাতে এবং মানসিক শান্তির উদ্দেশ্যে আমাদের সকলের উচিত শারীরিক ওজন…

    Read more