ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা | সঠিক ডায়েট চার্ট মেনে চলুন

Published:

Updated:

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা

Disclaimer

As an affiliate, we may earn a commission from qualifying purchases. We get commissions for purchases made through links on this website from Amazon and other third parties.

বর্তমানে ডায়াবেটিস আমাদের সবার কাছে পরিচিত একটি রোগ। আমাদের আশেপাশে বহু লোকজন এ রোগে আক্রান্ত। এমন অবস্থা হয়েছে যে ডায়াবেটিসের রোগী পাওয়া যাবে না এমন পরিবার পাওয়া দুস্কর। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, ডায়াবেটিস একটি অসংক্রামক রোগ, যা মহামারী রোগের মত ছড়িয়ে পড়েছে। এ রোগ একসাথে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ও সিস্টেমকে আক্রান্ত করে। তাই সঠিক সময়ে রোগ  নির্ণয় ও সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ জরুরী। 

সঠিক নিয়মে চলাচল এবং সঠিক খাদ্য গ্রহণ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটি সফল ডায়েট মেইনটেইন করে চললে এ রোগকে অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। প্রত্যেকটি ডায়বেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা আলাদা হবে। বয়স, ওজন, উচ্চতা কাজের ধরন, কায়িক শ্রম, জীবন যাপন পদ্ধতি, আর্থিক অবস্থা এসব কিছু বিবেচনা করে একটি তালিকা করা হয়। 

ডায়াবেটিস হলেই যে আপনি সব খাবার খেতে পারবেন না এমন নয়। তবে আপনাকে বাছাই করে খাবার খেতে হবে। নিয়ম শৃঙ্খলা অনুযায়ী সুস্থ মানুষের মতো একজন ডায়াবেটিস রোগীও সব ধরনের খাদ্য উপাদান শর্করা, আমিষ, চর্বি, খনিজ, ভিটামিন গ্রহণ করবে। তাহলে চলুন জেনে নেই ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা ও ডায়েট চার্ট:

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় যা যা থাকা উচিত

একটি স্বাস্থ্যকর সুখময় স্বাস্থ্যের জন্য ৫ ধরনের গ্রুপের খাবার খাওয়া প্রয়োজন। এগুলো হলো:

১) ফলমূল শাকসবজি।

২) লাল চালের ভাত, লাল আটার রুটি ইত্যাদি শ্বেতসার যুক্ত খাবার।

৩) প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার।  ডিম, মাছ, মাংস, ডাল, বাদাম শিম ইত্যাদি।

৪) দুগ্ধজাত খাবার। দই, ছানা, পনির ইত্যাদি।

৫) তেল, মাখন, ঘি ইত্যাদি।

ডায়াবেটিস রোগীরা যে সকল ফলমূল ও শাকসবজি খেতে পারেন:

১) বাঙ্গি বা জাম্বুরা খেতে পারেন। চাইলে বাঙ্গি ও জাম্বুরার সাথে টক দই মিশিয়েও খাওয়া যেতে পারে।

২) আলোবোখারা, খেজুর ইত্যাদি খাদ্য তালিকায় রাখুন।

৩) গাজর, মটরশুটি, বরবটি, শিম খাওয়া যায়।

৪) পালং শাক ও  মটরশুঁটি খেতে পারবেন।

৫) বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রকলি, শশা, লেটুস ইত্যাদি কম শর্করাযুক্ত শাকসবজি খেলে স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।

৬) বরই, তরমুজ, এভোকেড, পিচ ও বিভিন্ন ধরনের বেরি খেতে পারবেন।

ডায়াবেটিস রোগীরা যেসব ফল খেতে পারবে না:

ফল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কিছু কিছু ফল মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। এই ফলগুলো রোগীর শর্করার মাত্রা অত্যাধিক পরিমাণে বাড়িয়ে দেয়। এজন্য ডায়াবেটিস রোগীদের এসব ফল এড়িয়ে চলা উচিত। ফলগুলো হল:

ডায়াবেটিস রোগীদের আম ,আঙ্গুর, আনারস, তরমুজ, কলা, সবেদা ইত্যাদি ফল খাওয়া উচিত নয়।

ডায়াবেটিস হলে কি কি খাওয়া যাবে না

কিটো ডায়েট চার্ট জাহাঙ্গীর কবির

শরীরের মেদ চর্বি, অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য ডায়েটিং, ব্যায়ামসহ নানা প্রচেষ্টার অন্ত নেই। কিন্তু এই ব্যাপারে সফলতা খুবই কম। এই সমস্যার সমাধানে বর্তমানে বেশ সফল ও জনপ্রিয় একটি ডায়েটিং পদ্ধতি রয়েছে। যারা খুব চেষ্টা করেও শরীরের একটু ওজন কমাতে পারেনি তারা এই ডায়েট পদ্ধতিটি অনুসরণ করে খুব অল্প সময়ে সফলতা অর্জন করেছেন। এই পদ্ধতিটি হচ্ছে কিটো ডায়েট বা কিটোজনিক ডায়েট। কিটো ডায়েট মূলত সুপার লো-কার্বো ডায়েট। এখানে কার্ভো এক্সট্রিম লেভেলে অল্প থাকবে, প্রোটিন মিড লেভেলে থাকবে এবং ফ্যাট হাই থাকবে।

নরমাল যে সব ডায়েট আছে সে সব ডায়েটে ২০% পার্সেন্ট প্রোটিন, ৩০% ফ্যাট ও ৫০% কার্বোহাইড্রেট থাকে। কিন্তু কিটোজেনিক ডায়েটে টোটাল ক্যালোরির ৫% কার্বোহাইড্রেট, ২৫ % প্রোটিন ও ৭০% ফ্যাট থাকে। আপনার সারাদিনের খাবারের পার্সেন্টেজ এমন হবে। তার জন্য আপনাকে কোন খাবারে কি পরিমান কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট থাকে তা জানতে হবে। তাহলে চলুন জেনে নেই ডা জাহাঙ্গীর কবিরের ডায়েট চার্ট থেকে ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা:

ডায়াবেটিস হলে কি কি খাওয়া যাবে না

১) চালের তৈরি কিছু খাওয়া যাবেনা। যেমন- ভাত, চাউলের রুটি ইত্যাদি।

২) গমের তৈরি খাবার, যেমন- পাউরুটি, রুটি, বিস্কুট যে কোন প্রকার, গম দিয়ে তৈরি অন্যান্য দ্রব্যাদি, ইত্যাদি খাওয়া যাবেনা।

৩) ডাল খাওয়া যাবে না।

৪) শর্করা জাতীয় সবজি, যেমন- আলু ,মিষ্টি আলু, মূলা, গাছ আলু ইত্যাদি খেতে পারবেন না।

৫) চিনি এবং চিনি দিয়ে তৈরি কোন খাবার খাওয়া যাবেনা।

৬) সরাসরি দুধ দিয়ে বানানো কোন দ্রব্যাদি, যেমন- দই, টক দই, মালাই ইত্যাদি মোটেও খাওয়া যাবেনা।

৭) সূর্যমুখী তেল, রাইস ব্যান অয়েল, সয়াবিন তেল ক্যানলা ওয়েল, এসব তেল দিয়ে রান্না করা খাবার খাওয়া যাবেনা।

৮) মধু এবং যেকোন প্রকার মিষ্টি ফলমূল খাওয়া যাবেনা।

৯) যেসব মুরগিগুলো ট্যানারি বর্জ্য থেকে উৎপাদিত খাদ্য খাওয়ানো হয়, সয়া খাওয়ানো হয় যেমন, ফার্মের মুরগি এসব খাওয়া যাবেনা।

১০) যেসব গরু ষাঁড় ও খাসি ইনজেকশনের মাধ্যমে মোটাতাজও করা হয়েছে এসব গরুর মাংস খাওয়া যাবেনা।

ডায়াবেটিস হলে কি কি খাওয়া যাবে

১) যে কোন প্রকার মাছ খেতে পারবেন। কিন্তু দেশীয় মাছ খাওয়া বেশি ভালো। যেমন- বোয়াল, পাংকাশ, ইলিশ, সরপুটি, ব্রীগেড, গ্রাসকাপ, বাইম মাছ ইত্যাদি। এক্ষেত্রে সাগরের মাছ হলে আরো ভালো।

২) সবুজ শাকসবজি, যেমন- কচি সবুজ মিষ্টি কুমড়া, গাজর ইত্যাদি খেতে পারবেন কিন্তু সেটা খুব অল্প পরিমাণ।

৩) জলপাই, আমলকি, কচি ডাবের পানি ইত্যাদি টক জাতীয় ফল খেতে পারবেন।

৪) গরু ও খাসির মাংস খেতে পারবেন, তবে সেটা হতে হবে  ঘাস লতাপাতা ও খড়খুটো খেয়ে লালিত পালিত ইনজেকশন মুক্ত। এসব খাবার অল্প পরিমাণে খাওয়াই ভালো। অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না।

৫) এ সময়ে গরু এবং খাসির পায়া খেতে পারেন, এটা বেশ উপকারী। তবে খুব অল্প পরিমাণে খাবেন।

৬) মুরগির ডিম খাওয়া যাবে। ফার্মের হলেও সমস্যা নেই। কিন্তু দেশের মুরগি হলে বেশি ভালো হয়।

৭) বেশি বেশি মাছের ডিম খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

৮) অর্গানিক বাটার, ঘি, এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল, এমসিটি অয়েল, কোকোনাট অয়েল ইত্যাদি খাওয়া যাবে।

৯) চীনা বাদাম, কাজুবাদাম, পেস্তা বাদাম যেকোনো প্রকার বাদাম খাওয়া যাবে। আপনি চাইলে উপরে উল্লেখিত নারকেল তেল দিয়ে বাদাম ব্লেন্ড করে পিনাট বাটার তৈরি করে খেতে পারেন, যা খেতে খুব সুস্বাদ্য। তবে চেষ্টা করবেন খুব অল্প পরিমাণে খাওয়ার।

১০) চা,কফি ইত্যাদি খেতে পারবেন দুধ চিনি ছাড়া। গ্রিন টি খেতে পারেন লেবু আদা ও সামান্য পরিমাণে লবণ মিশিয়ে। এছাড়াও কফির সাথে মাখন বা ঘি, এমসিটি অয়েল এবং অর্গানিক কোকোনাট অয়েল মিশিয়ে বাটার কফি তৈরি করে খেতে পারেন। যা খুব ভালো কাজে দিবে।

যেভাবে ডায়েট শুরু করবেন

ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা ও ডায়েট চার্ট সম্পর্কে তো জেনেই গেছেন চলুন, এবার জেনে নিন কিভাবে ডায়েট শুরু করবেন।

সকালের নাস্তা:

১) যদি আপনার সকালে খাওয়ার অভ্যাস থাকে তাহলে সকাল আটটা থেকে সাড়ে আটটার মধ্যে দুধ চিনি ছাড়া এক কাপ চা খেতে পারেন। চায়ের মধ্যে আধা লেবু এবং সামান্য লবন দিবেন।

২) কুসুম গরম পানির সাথে কোকোনাট ভিনেগার, অ্যাপেল সিডার ভিনেগার খেতে পারেন।

৩) গরম পানির সাথে লেবু মিশিয়ে খেতে পারেন।

আপনার যদি সকালের নাস্তা করার অভ্যাস না থাকে তাহলে দুপুরের খাবার অবশ্যই দেড়টার মধ্যে খেতে হবে। আর যারা দেরিতে নাস্তা করেন তারা উপরের পদ্ধতি অনুযায়ী নাস্তা করে দুপুরের খাবার আড়াইটা থেকে তিনটার মধ্যে খাবেন।

দুপুরের খাবার:

১) দুপুরে খাবার খাওয়ার আগে সব সময় অ্যাপেল সিডার ভিনেগার এক গ্লাস পানির সাথে মিশিয়ে খাবেন। এতে করে আপনার গ্যাসের সমস্যা হবে না এবং চর্বি কাটতে সাহায্য করবে।

২) শাক, সবজি, মাছ, মাংস, ডিম, বাদামের বাটার ইত্যাদি দুপুরের খাবারের ম্যানুতে রাখতে পারেন। সেই সাথে গাজর, শসা ও টমেটোর সালাদ রাখবেন।

৩) শাকসবজির রান্নার ক্ষেত্রে চেষ্টা করবেন যতটুক সম্ভব কম সেদ্ধ করার। এতে সবজির গুণগত মান ঠিক থাকবে এবং এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল দিয়ে রান্না করবেন। মাছ ভাজলে ডিপ ফ্রাই করবেন না, এতে খাদ্যগুণ নষ্ট হয়ে যায় এবং রান্না করলে অবশ্যই এই তেল দিয়ে করবেন।

৪) ডিম ভাজি খেতে পারেন। ডিমে আছে প্রোটিন এবং ভালো ফ্যাটের উৎস। আপনি চাইলে একদিনে সর্বোচ্চ ছয়টা ডিম খেতে পারবেন কোন সমস্যা নেই।

৫) ফার্মের মুরগির না খেয়ে দেশি মুরগি খেতে পারবেন এবং গরুর মাংস খেতে পারবেন তবে সেটা উপরের শর্ত যোগ্য হতে হবে। একটা জিনিস খেয়াল রাখবেন, মাছ খেলে গোশত খাবেন না। গোশত খেলে মাছ খাবেন না। যদি আপনি দেশি মুরগি ব্যবস্থা না করতে পারেন, যেমন – যারা প্রবাসে অবস্থান করে তারা চাইলেও দেশি মুরগি খেতে পারবে না, সেক্ষেত্রে আপনি এক টুকরো ফার্মের মুরগি খেতে পারেন।

৬) ভেড়া, উট, দুম্বা ইত্যাদির গোশত এক টুকরার বেশি খাবেন না।

বিকেলের নাস্তা

বিকালে চা, বাটার কফি খেতে পারেন।

 রাতের খাবার

১) রাতের খাবারও দুপুরের খাবারের মতো। এখানে দুই একটা আইটেম কম বেশি হলে সমস্যা নেই।

২)সব সময় রাত আটটার আগেই রাতের খাবার খেয়ে নেবেন। এরপর চেষ্টা করবেন পানি ছাড়া আর কিছু না খাওয়ার।

৩) রাতের খাবার খাওয়ার পূর্বে এক গ্লাস পানিতে ভিনেগার মিশিয়ে খেয়ে নিবেন।

যে বিষয়গুলো অবশ্যই মানতে হবে

১) সব সময় চেষ্টা করবেন রাত ১০ টা থেকে ১১ টার মধ্যে ঘুমানোর। কারণ আমাদের শরীরে গ্রোথ হরমোন নিঃসরণ হয় রাত ১০টা থেকে ২টার ভেতরে। ফ্যাট বার্নিংয়ে প্রচুর সাহায্য করে এই গ্রোথ হরমোন গুলো। এই বিষয়টি অগ্রাহ্য করবেন না। তাহলে ডায়েট অসম্পূর্ণ থেকে যাবে এবং ভালো ফলাফল পাবেন না।

২) ভোর সকালে ওঠার চেষ্টা করবেন উঠে নামাজ পড়ে হাঁটতে বের হবেন। ফ্যাট বার্নিংয়ের জন্য খালি পেটে হাটা অত্যন্ত কার্যকরী। হাঁটাচলার গতি বয়সের উপর নির্ভর করবে। আপনার বয়স যদি ৪০ এর নিচে হয় তাহলে জগিং করুন অথবা জোরে জোরে হাটুন ৪০/৬০ মিনিট। আর যদি বয়স ৪০ এর উপরে হয় তাহলে স্বাভাবিক গতিতে ৪০/৬০ মিনিট হাঁটুন। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন হাঁটতে হাঁটতে যেন শ্বাসকষ্ট না হয়।

৩) সকালে উঠে ইয়োগা করতে পারেন। ইয়োগা দ্রুত মেদ ভুরি কমাতে সাহায্য করে।

৪) উপরে উল্লেখিত ধাপগুলো আপনার ডায়েটিংয়ের প্রথম দাপ। ৭-৮ দিন উপরোক্ত নিয়মগুলো মেনে চলুন। এই ৭-৮দিনে আপনার শরীর ফ্যাট বার্নিং ও চর্বি গলাতে শিখে যাবে।

৫) দ্বিতীয় ধাপ শুরু করবেন রোজা রেখে। এক্ষেত্রে আপনি সেহরিতে শুধু পানি খেয়ে রোজা রাখবেন এবং সারাদিন পানি থেকে শুরু করে সমস্ত কিছু খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।

৬) স্বাভাবিক রোজার মত ভারী খাবার দিয়ে ইফতার করবেন না। ইফতার করবেন শশা, বাদাম, মাখন দিয়ে এবং সালাদ ও টক ফল রাখুন।

৭) ইফতার করার এক ঘণ্টার ভেতরে চেষ্টা করবেন রাতের খাবার খাওয়ার। রাতের খাবার হিসাবে  উপরে উল্লেখিত খাবার গুলো খাবেন এবং খাওয়ার আগে অবশ্যই ভিনেগার মিশ্রিত পানি খেয়ে নিবেন।

৮) রোজা রাখার ফলে বসা থেকে উঠে দাঁড়ানোর সময় সামান্য মাথা ঘুরতে পারে। এই সমস্যা দূর করতে লবণ মিশ্রিত পানি খাবেন প্রতিদিন। ডাবের পানিও খেতে পারেন। প্রতিদিন একটি কচি ডাব খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

৯)একটানা যতগুলো রোজা রাখা সম্ভব ততগুলোই রাখবেন। এতে দ্রুত ফল পেতে থাকবেন। তবে ৭ দিন রোজা রাখার পর ২দিন বিরতি দিবেন। এই ২দিন ৪ ঘন্টার ব্যবধানে দিনে দুই বেলা খাবেন এবং বাকি সময়টাতে ওয়াটার ফাস্টিং করবেন। যেমন গ্রিন টি, লেবু, ভিনেগার, লবণ মিশ্রিত পানি এগুলো খাবেন।

১০) যারা একটানা রোজা রাখতে পারবেন না তারা সপ্তাহে অত্যন্ত দুটি রোজা রাখুন।‌ যাদের সারাদিন রোজা রাখতে সমস্যা আছে, তারা উপরের খাদ্য ম্যানুগুলো অনুসরণ করে খাদ্য বিরতি দীর্ঘ করুন। অর্থাৎ দুই বেলা খাবেন ৪ ঘণ্টার ব্যবধানে এবং বাকি ২০ ঘন্টা ওয়াটার ফাস্টিং করবেন এবং নিয়মিত ব্যায়াম করুন। দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যেই আপনি আপনার কাঙ্খিত ফলাফল পেয়ে যাবেন।

উল্লেখযোগ্য আরো কিছু বিষয়

১) সব সময় টেনশন মুক্ত থাকার চেষ্টা করবেন।

২) হাসিখুশি ও প্রফুল্ল থাকবেন।

৩) সকালের রোদ গায়ে লাগানোর চেষ্টা করুন। এ রোদে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়, যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।

৪) মুসলিম হলে নামাজ পড়বেন, বেশি বেশি নফল নামাজ আদায়ের চেষ্টা করবেন। এতে ইবাদতের পাশাপাশি আপনার শারীরিক কিছু ব্যায়ামও হবে। যা স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। অন্যান্য ধর্মের হলে নিজ নিজ ধর্ম রীতি অনুসারে ইবাদত করুন। সৃষ্টিকর্তার উপরে বিশ্বাস রাখলে অবশ্যই আপনি সফল হবেন।

৫) ফাস্টফুড খাবার থেকে বিরত থাকুন।

৬) ডায়াবেটিস রোগীর খাবার রান্না করার জন্য প্যাকেট মসলা ব্যবহার না করে নিজেরা মসলা ভাঙ্গিয়ে নিন। প্যাকেটজাত পণ্য পরিহার করার চেষ্টা করুন।

৭) রান্নায় সয়াবিন তেল ব্যবহার করবেন না। সয়াবিন তেল ব্যবহার না করে একটা ভার্জিন অলিভ অয়েল ব্যবহার করুন। আর তাও না পারলে সরিষার তেল ব্যবহার করুন। প্যাকেটজাত ব্যবহার না করে নিজেরা মেশিনে প্রক্রিয়া করে নিন।

সবশেষ, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি সফল ডায়েট চার্ট ও খাদ্য তালিকার বিকল্প নেই। উপরোক্ত ডায়াবেটিস রোগীর খাবার তালিকার জন্য ডা জাহাঙ্গীর কবির ডায়েট চার্টটি একটি সফল চার্ট। ডায়াবেটিস রোগীদের খাবার তালিকায় ডায়েট চার্ট জাহাঙ্গীর কবির এই চার্টটি মেন্টেন করে চললে আপনি ডায়াবেটিস কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।

আশা করি, ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা ও ডায়েট চার্ট এই আর্টিকেল থেকে আপনাকে ডায়াবেটিস সম্পর্কিত তথ্য দিতে সক্ষম হয়েছি। আপনার সুস্থতাই আমাদের একান্ত কাম্য। আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

About the author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Latest Posts

  • সর্দি থেকে মুক্তির উপায়, নাকের এলার্জি দূর করার উপায় | দ্রুত উপশম পেতে ঘরোয়া চিকিৎসা

    সর্দি থেকে মুক্তির উপায়, নাকের এলার্জি দূর করার উপায় | দ্রুত উপশম পেতে ঘরোয়া চিকিৎসা

    নাকের এলার্জি হচ্ছে নাকের ঝিল্লি প্রদাহের কারণে নাকের একটি সমস্যা। এটি সারা বিশ্বব্যাপী একটি স্বাস্থ্য সমস্যা। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ নাকের এই রোগে আক্রান্ত। নাকের এলার্জি কোন মারাত্মক ক্ষতিকর রোগ না হলেও এ রোগের কারণে দৈনন্দিন জীবন প্রবাহ ব্যাহত হয়। এলার্জিজনিত সর্দি এবং হাঁচি জীবনকে অতিষ্ট করে তোলে। এই রোগে হঠাৎ…

    Read more

  • কফ, কাশি দূর করার উপায় | সঠিক চিকিৎসাই হতে পারে কাশি দূরীকরণের মাধ্যম

    কফ, কাশি দূর করার উপায় | সঠিক চিকিৎসাই হতে পারে কাশি দূরীকরণের মাধ্যম

    গলায় বুকে কফ জমে থাকা বেশ বিরক্তিকর একটি সমস্যা। ঋতু পরিবর্তনের ফলে আবহাওয়া পরিবর্তন হয়। আর আবহাওয়ার এই দ্রুত পরিবর্তন আমাদের শরীর খাপ খাওয়াতে পারে না, যার কারণে সৃষ্টি হয় ঠান্ডা জ্বর ও সর্দি-কাশির। ঠান্ডা সর্দি কাশি এগুলো আমাদের কাছে খুব পরিচিত রোগ হলেও এই ঠান্ডা সর্দি কাশি থেকে আমাদের দেহে অনেক বড় বড় অসুখ…

    Read more

  • ওজন কমানোর উপায় ডায়েট চার্ট | সুস্থ স্বাভাবিক জীবন

    ওজন কমানোর উপায় ডায়েট চার্ট | সুস্থ স্বাভাবিক জীবন

    সুস্থ স্বাভাবিক এবং রোগমুক্ত জীবন আমরা কে না চাই। আর এই সুস্থ সুন্দর জীবন যাপন করার একমাত্র উপায় হচ্ছে শারীরিক ওজন ঠিক রাখা। কেননা ওজন বেড়ে গেলে যে কোন রোগের ঝুঁকি ও বেড়ে যায়। এজন্য বাড়তি ওজন অনেকের মানসিক অসুস্থির প্রধান কারণ। তাই রোগ প্রকোপ কমাতে এবং মানসিক শান্তির উদ্দেশ্যে আমাদের সকলের উচিত শারীরিক ওজন…

    Read more