প্রাচীনকাল থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে বহু সভ্যতা যেমন গড়ে উঠেছে, তেমনি অনেক সভ্যতা হারিয়ে গেছে কালের অতল গহ্বরে। বিভিন্ন সময়ে গড়ে ওঠা এসব সভ্যতার মানুষেরা তাদের সীমিত জনশক্তি দিয়ে গড়ে তুলেছিল অসাধারণ কিছু স্থাপনা। যার অকল্পনীয় সৌন্দর্য্য ও অসাধারণ নির্মাণকৌশল আজও মানুষের কাছে বিস্ময়ের বস্তু। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা অদ্ভুত সুন্দর ঐতিহাসিক স্থানগুলোর মধ্যে সেরা স্থানটি বেছে নেওয়া সত্যিই কঠিন।
তারপরও আমরা অনলাইন থেকে বিভিন্ন তথ্য ও মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচিত স্থানগুলোকে আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। এগুলোর ঐতিহাসিক গুরুত্ব যেমন আছে, তেমনি ভ্রমণপিপাসুদের কাছে এই স্থানগুলো বিশেষভাবে সমাদৃত।
অদ্ভুত সুন্দর ঐতিহাসিক স্থান
পৃথিবীর বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থানগুলোর মধ্যে ১৩ টি স্থানের আদ্যোপান্ত নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনাঃ
১. হারানো শহর মাচুপিচুঃ
পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ও সমৃদ্ধতম ইনকা সভ্যতার একটি বিস্ময়কর নগরীর নাম মাচুপিচু। মাচুপিচু শব্দের অর্থ হল পুরানো পর্বতের চূড়া, যা মূলত আমেরিকান প্রাচীন জাতি কেচুয়াদের ব্যবহৃত শব্দ। দক্ষিণ আমেরিকার পেরুতে অবস্থিত এই বিধ্বস্ত শহরটি একটি পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত। বেশির ভাগ সময়ই মাচুপিচু নগরী মেঘের আড়ালে ঢাকা থাকে। তাই একে বলা হয় মেঘের দেশের নগরী।
‘ইনকার হারানো শহর’ নামে পরিচিত প্রাচীন এই নগরী একসময় ইনকা সভ্যতার একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছিল। পরবর্তীতে স্প্যানিশরা জায়গা দখল করে নিলে শহরটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। ১৯১১ সালে প্রত্নতাত্ত্বিক হিরাম বিনহাম এই মাচুপিচু নগরী পুনরায় আবিষ্কার করেন। এরপর থেকেই এটি পর্যটকদের কাছে একটি আকর্ষণীয় দর্শনীয় স্থান হয়ে ওঠে। ১৯৮৩ সালে ইউনেস্কো মাচুপিচু নগরীকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী এলাকার অন্তর্ভুক্ত করে এবং ২০০৭ সালে এটি বিশ্বের সাত আশ্চর্যের একটি হয়ে ওঠে।
২. মায়া নগর তিকালঃ
মায়া ভাষায় ‘তিকাল’ শব্দের অর্থ কণ্ঠস্বরের স্থান। মধ্য আমেরিকার গুয়েতেমালার গহীন বৃষ্টিবনে গড়ে ওঠা মায়া নগর তিকাল প্রায় ৬ বর্গ মাইল এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। এটি সুবিশাল মায়া সভ্যতার সবচেয়ে বড় ও প্রাচীন জনপদ। খ্রিস্টীয় ষষ্ট-সপ্তম শতকে তিকাল প্রায় ৩০০ উপাসনালয়, প্রাসাদ, প্রধান চত্বর, বাসগৃহ ও খেলার মাঠ নিয়ে গড়ে উঠেছিল। সে সময় এটি ছিল মায়া সভ্যতার অন্যতম রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় কেন্দ্র।
মায়াদের তিকাল নগর ছেড়ে যাওয়ার পর হাজার বছর ধরে এটি বৃষ্টিবনে ঢাকা পড়েছিল। ১৮৪৮ সালে স্প্যানিশ সরকারের উদ্যোগে এটি বৃষ্টিবনের অন্তরাল থেকে বেরিয়ে আসে। গুয়েতেমালা সরকার তিকাল ঘিরে ২২০ বর্গমাইল নিবিড় বৃষ্টিবনকে জাতীয় উদ্যান বা তিকাল ন্যাশনাল পার্ক হিসেবে গড়ে তুলেছে। ১৯৭৯ সালে ইউনেস্কো গুয়েতেমালার এই অপূর্ব প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনকে হিউম্যান হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করে।
৩. গিজার পিরামিডঃ
প্রাচীন বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের একটি হল গিজার পিরামিড। রহস্যময় এই পিরামিডগুলো কায়রো শহরের দক্ষিণ পশ্চিমে মরুভূমির মধ্যে নীলনদ বরাবর অবস্থিত। মিশরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় এই স্থানটি গিজার কবরস্থান নামেও পরিচিত। পিরামিডগুলো আসলে সে সময়ের রাজাদের সমাধিস্থল। ফারাও রাজাদের মৃতদেহ মমি করে রাখা হত এই পিরামিডের মধ্যে।
গিজাতে আছে খুফু, খাফরে ও মেনকৌর নামের তিনটি পিরামিড। সবচেয়ে বড় পিরামিডটি ফারাও রাজা খুফু নির্মাণ করেছিলেন। এটি খুফুর পিরামিড নামেও পরিচিত। ৩০০০ বছরেরও বেশি বয়সের এই পিরামিডগুলো কিভাবে তৈরি হয়েছে এ সম্পর্কে এখনো কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি। রাজাদের জন্য তৈরি করা অসাধারণ নির্মাণকৌশলের এই পিরামিডগুলো পরিদর্শনে প্রতিদিন শত শত পর্যটক আসে।
৪.অ্যাংকর ভাটঃ
উত্তর পশ্চিম কম্বোডিয়ার অ্যাংকর শহরে অবস্থিত সুবিশাল এই স্থাপনাটি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ মন্দির। অ্যাংকর ভাট অর্থ শহরের মন্দির। ১২শ শতাব্দীতে এই ঐতিহাসিক মধ্যযুগীয় মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন রাজা ২য় সূর্যবর্মণ। তিনি এটি তার রাজধানী ও প্রধান উপাসনালয় হিসেবে তৈরি করেন।
প্রথমদিকে এটি একটি বিষ্ণু মন্দির ছিল। কিন্তু পরে এটি বৌদ্ধ মন্দিরে পরিণত হয়। অ্যাংকর ভাটের নির্মাণশৈলী খমের সাম্রাজ্যের স্থাপত্য শিল্পকলার অনুপম নিদর্শন। চারদিকে পরিখা বিশিষ্ট শৈল্পিক নৈপূণ্যের নির্দেশক অ্যাংকর ভাটকে আজ ও পৃথিবীর অন্যতম ধর্মস্থান হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
৫.পেত্রা নগরীঃ
পৃথিবীর অসংখ্য পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু এই পাথুরে নগরী পেত্রা। এটি বর্তমান জর্ডানের দক্ষিণ পশ্চিমের গ্রাম ওয়াদি মুসার ঠিক পূর্বে হুর পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। প্রায় দুই হাজার বছরের পুরানো এই নগরী সম্পূর্ণ পাথরের তৈরি। ৪০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত এটি ছিল নাবাতাইন রাজ্যের রাজধানী।
প্রাচীন আরব নগরী পেত্রার আনাচে কানাচে রয়েছে অনেক গুহা। এই গুহাগুলোই এক কালে মানুষের যাতায়াতের পথ হিসেবে ব্যবহার করা হত। পেত্রা নগরীর প্রাচীন দালানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হল খাজনেত ফিরাউন মন্দিরটি, যা ফারাওদের ধনভান্ডার নামেও পরিচিত। ১৮১২ সালে জোহান লুডিগ বারখাট নামের একজন সুইস পরিব্রাজক ইতিহাসে বিলীন হয়ে যাওয়া এই নগরী পুনরায় আবিষ্কার করেন। ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো পেত্রা নগরীকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করে।
৬. স্টোনহেঞ্জঃ
নব্যপ্রস্তর যুগে নির্মিত স্টোনহেঞ্জ ইংল্যান্ডের উইল্টশায়ারে অবস্থিত একটি প্রাগৈতিহাসিক স্তম্ভ। এটি মূলত বিশাল সমতল ভূমিতে খাড়া পাথরের তৈরি একটি বিস্ময়কর স্থাপনা। অনেকে মনে করেন প্রায় চার হাজার বছর আগে তৈরি এই স্থাপনাটি একটি সমাধিস্থল। আবার অনেকের মতে, জায়গাটি কেবল মন্দির হিসেবে ব্যবহার করা হত।
স্টোনহেঞ্জের সারসন নামে পরিচিত সবচেয়ে বড় পাথরগুলোর ওজন প্রায় ২৫টন এবং গড় উচ্চতা প্রায় ৩০ মিটার। ৪ টন ওজনের ছোট পাথরগুলোকে ভাঙলে বা ভেজালে নীলচে আভা দেখা যায়। তাই ছোট পাথরগুলোকে বলা হয় নীল পাথর বা Blue stone। চমৎকার এই প্রাগৈতিহাসিক স্তম্ভটি শুধু ইংল্যান্ডের গৌরব নয়, পুরো পৃথিবীর কাছে এক বিস্ময়। দর্শনার্থীদের কাছে স্টোনহেঞ্জ এক অপার সৌন্দর্যের নাম হলেও, বিশেষজ্ঞদের কাছে এটি এখনো একটি অমীমাংসিত রহস্য।
৭. কলোসিয়ামঃ
ইতালির রোম শহরে অবস্থিত কলোসিয়াম একটি বৃহৎ উপবৃত্তাকার ছাদবিহীন মঞ্চ। রোমান সাম্রাজ্যে নির্মিত অসাধারণ এই গ্যালারিটি গ্লাডিয়েটরসদের মধ্যে লড়াইয়ের প্রতিযোগিতার প্রদর্শনী বা অন্য কোনো প্রদর্শনীর কাজে ব্যবহার করা হত। ৫০ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন মঞ্চটিকে রোমান সাম্রাজ্যের সবচেয়ে বড় স্থাপনা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
প্রাচীন স্থাপত্যশিল্পের এই অনন্য নিদর্শনটি নির্মাণের সময় পাথর এবং কংক্রিট ব্যবহার করা হয়েছিল। প্রায় ৬ একর জমির উপর নির্মিত কলোসিয়ামের দৈর্ঘ্য ১৮৯ মিটার এবং প্রস্থ ১৫৬ মিটার। এতে ছিল ৮০টি প্রবেশদ্বার। রোমান সাম্রাজ্যের সকল নাগরিক বিনামূল্যে কলোসিয়ামে প্রবেশ করতে পারত। ১৯৯০ সালে ইউনেস্কো কলোসিয়ামকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী অঞ্চলের স্বীকৃতি দেয়। এটি ২০০৭ সালে পৃথিবীতে মানুষের তৈরি আধুনিক সপ্তাশ্চর্যের একটি বলে নির্বাচিত হয়।
৮. পার্থেননঃ
গ্রীসের এথেন্স শহরের মাঝখানে অ্যাক্রোপোলিস পাহাড়ের উপর অবস্থিত পার্থেনন আসলে একটি প্রাচীন মন্দির। দেবী এথিনাকে উৎসর্গ করে এই মন্দিরটি নির্মাণ করা হয়েছিল ডরিক রীতিতে। এই বিশাল মন্দিরের পুরোটাই মার্বেলের তৈরি।
অত্যন্ত দৃঢ় ভিত্তির উপর নির্মিত হওয়ায় ১৬৮৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত মন্দিরটি অটুট অবস্থায় দন্ডায়মান ছিল। কিন্তু এর ভেতরের বারুদাগারে আগুন লেগে বিস্ফোরণ ঘটার ফলে মন্দিরটি অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তবুও এথেন্সের চারদিকের বিপুল ধ্বংসলীলার মধ্যে অতীত গৌরবের সাক্ষীরূপে মন্দিরটি এখনো দাঁড়িয়ে আছে।
৯. ইস্টার দ্বীপঃ
চিলির উপকূল থেকে ৩৬০০ কিলোমিটার দূরের এই দ্বীপটি পৃথিবীর অন্যতম নিঃসঙ্গ দ্বীপ। প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝামাঝি অবস্থিত জনমানবহীন দ্বীপটির মালিকানা চিলির। ছোট রহস্যময় এই দ্বীপটি ১৭২২ সালে ইস্টার সানডের দিনে আবিষ্কার করা হয় বলে এর নাম দেয়া হয়েছে ইস্টার দ্বীপ। ইউনেস্কো এই দ্বীপটিকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
তিনটি আগ্নেয়গিরি দ্বারা পরিবেষ্টিত এই দ্বীপে নীরবে দাঁড়িয়ে আছে পাথরের তৈরি অসংখ্য ভাস্কর্য। ইস্টার দ্বীপের সাতটি বৃহদাকার ভাস্কর্য এর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ। এদের বলা হয় নেভেল অব দ্য ওয়ার্ল্ড। দ্বীপে ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য ভাস্কর্যের একেকটি প্রায় ১৫ থেকে ২০ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট। স্থানীয়রা এদের মোয়াই বলে থাকে। প্রায় ৩০০ বছর পার হয়ে যাওয়ার পরও এই দ্বীপের মূর্তিগুলো এখনো রহস্যের অন্তরালেই রয়ে গেছে।
১০. তাজমহলঃ
পৃথিবীর সাতটি বিস্ময়ের মধ্যে অন্যতম তাজমহল একটি রাজকীয় সমাধি। মুঘল সম্রাট শাহজাহান তার স্ত্রী মমতাজের স্মৃতির উদ্দ্যেশ্যে সৌধটি নির্মাণ করেন। ভারতের উত্তর প্রদেশের আগ্রায় অবস্থিত তাজমহল মুঘল সাম্রাজ্যের স্থাপত্যশৈলীর একটি অনুপম নিদর্শন।
সামগ্রিকভাবে তাজমহল একটি জটিল অখন্ড স্থাপত্য। যার নির্মাণশৈলীতে আছে পারস্য, তুরস্ক, ভারতীয় এবং ইসলামী স্থাপত্যশিল্পের অপূর্ব মেলবন্ধন। ধারণা করা হয়, তাজমহল নির্মাণের জন্য ভারত, পাকিস্তান, পারস্য ছাড়াও বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ২৮ রকমের মূল্যবান পাথর ব্যবহার করা হয়েছিল। ১৯৮৩ সালে ইউনেস্কো তাজমহলকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের অন্তর্ভুক্ত করে।
১১. আলহাম্বরাঃ
আলহাম্বরার পুরো নাম কালাত আলহাম্বরা বা লাল কেল্লা। স্পেনের আন্দালুসিয়ার গ্রানাডাতে অবস্থিত আলহাম্বরা একটি মুসলিম স্থাপত্য। তেরশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে গ্রানাডা আমিরাতের মরিশ শাসকরা এটি নির্মাণ করে।
নাসরি রাজবংশের শাসনকালে তৈরি করা এই প্রাসাদটি বাসস্থান ও রাজসভা হিসেবে ব্যবহার করা হত। প্রাচীন এই দূর্গটির মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৭৪০ মিটার। ১৯৮৪ সালে ইউনেস্কো আলহাম্বরাকে হিউম্যান হেরিটেজ সাইট হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
১২. চীনের মহাপ্রাচীরঃ
পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল দেশ চীনে অবস্থিত দ্য গ্রেট ওয়াল অব চায়না মানুষের তৈরি বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্থাপনা। চীনের দীর্ঘতম এই প্রাচীরের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৬৯৫ কিমি এবং উচ্চতা ৪.৫৭ থেকে ৯.২ মিটার বা প্রায় ১৫ থেকে ৩০ ফুট। চওড়ায় প্রাচীরটি প্রায় ৯.৭৫ মিটার বা ৩২ ফুট।
চীনা ভাষায় এই মহাপ্রাচীরকে বলা হয় ছাংছং। যার আভিধানিক অর্থ দীর্ঘ দেয়াল। খ্রিস্টপূর্ব ৭ম শতাব্দীতে এর নির্মাণ কাজ শুরু হলেও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজা এই প্রাচীরের বিভিন্ন অংশ তৈরি করেন। তবে ২২০ থেকে ২০৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে প্রাচীরের সবচেয়ে দীর্ঘ অংশ নির্মাণ করেন চীনের সম্রাট কিন শি হুয়াং। মহাপ্রাচীরটি চীনের সাংহাই পাস থেকে শুরু হয়ে লোপনুর নামক স্থানে এসে শেষ হয়েছে।
১৩. চিচেন ইতজাঃ
প্রাক কলোম্বিয়ান সময়ে গড়ে ওঠা মায়া সভ্যতার বিখ্যাত পিরামিড চিচেন ইতজা বিশ্বের সপ্তাশ্চর্যের একটি। পৃথিবীর অন্যতম দৃষ্টিনন্দন ও রহস্যময় এই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনটি পর্যটকদের জন্য একটি অতি আকর্ষণীয় স্থান। বর্তমান মেক্সিকোর উত্তরে ইয়ুকাতান উপদ্বীপে অবস্থিত চিচেন ইতজা মেক্সিকোর একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র।
প্রাচীন মেক্সিকান শব্দ চিচেন ইতজার অর্থ ইতজার কুয়োর মুখ। ইতজা মূলত ইয়ুকাতানের উত্তর অংশে বসবাসকারী একটি উপজাতির নাম ছিল। চিচেন ইতজার আরেক নাম আনসাইবানাল। যার অর্থ সপ্তপ্রভু বা সাত শাসক। অতিকায় পিরামিডের গা বেয়ে উঠে যাওয়া দীর্ঘ খাড়া সিঁড়ির অনিন্দ্যসুন্দর স্থাপত্যটি ১৯৮৮ সালে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে গৃহীত হয়।
পৃথিবীর প্রতিটি দেশে রয়েছে বিশেষ কিছু সুন্দর ও ঐতিহাসিক স্থান, যার সৌন্দর্য আমাদের মনকে আনন্দময় করে তোলে। আজকের আলোচ্য ১৩ টি ঐতিহাসিক স্থান ছাড়াও রয়েছে অনেক অদ্ভুত সুন্দর স্থান।
Leave a Reply