রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | কথা, গান এবং সুরে এখন পর্যন্ত অদ্বিতীয় রবি ঠাকুর

Published:

Updated:

আমাদের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

Disclaimer

As an affiliate, we may earn a commission from qualifying purchases. We get commissions for purchases made through links on this website from Amazon and other third parties.

গানের কথা বলুন আর সুর সবকিছুতে আমরা এখন পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথের কাছে যতটা ঋণী অন্য কোন বাঙালির কাছে ততটা নই। আমাদের মননে, মর্মে, চিন্তায়, প্রেমে, দ্রোহে রবীন্দ্রনাথ বিশাল একটা জায়গা দখল করে আছে। রবীন্দ্রনাথের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আমাদের প্রথম পর্বটি ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। 

প্রথম পর্বে আমরা আলোচনা করেছি কবি জীবনের দুরন্ত শৈশব, স্কুল পালানো রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে তার যৌবন, বিয়ে এবং পারিবারিক আবহ নিয়ে। যারা প্রথম পর্বটি মিস করেছেন তাদের জন্য উপরে লিংক দিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

আজ দ্বিতীয় পর্বে আমরা আলোচনা করার চেষ্টা করবো সুর এবং গানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং আমাদের বাঙালিয়ানা। সেই সাথে কবির জাপান সফর, শান্তি নিকেতন প্রতিষ্ঠা এবং যুগ সন্ধিক্ষণে কবির দাঁড়িয়ে থাকা। এক নতুন রবীন্দ্রনাথকে আবিষ্কারের চেষ্টা থাকবে আমাদের। তাহলে চলুন শুরু করা যাক। 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

রবীন্দ্রনাথের বিচিত্র সৃষ্টির অন্যতম ধারা তাঁর অসাধারণ গান। এই সঙ্গীতপ্রতিভা পারিবারিক সূত্রেই অঙ্কুরিত ও বিকশিত হয় তাঁর মধ্যে। প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের সংমিশ্রণে গানের বাণী ও সুরে নব নব নিরীক্ষার ভিতর দিয়ে তিনি নির্মাণ করেন সঙ্গীতের এক স্বতন্ত্র জগৎ, যা একান্তভাবেই তাঁর নিজস্ব সৃষ্টি এবং কালক্রমে এই রবীন্দ্রসঙ্গীত হয়ে ওঠে কালজয়ী।

১৯১১ সালে রবীন্দ্রনাথের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের পক্ষ থেকে রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী, বিচারপতি সারদাচরণ মিত্র, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, জগদীশচন্দ্র বসু, মণীন্দ্রনাথ নন্দী এবং অন্যান্য পন্ডিত মিলে সাড়ম্বরে কবির জন্মোৎসব পালন করেন। নোবেল পুরস্কার জয়ের পূর্বে এটাই ছিল কবির প্রতি স্বদেশবাসীর প্রথম অর্ঘ্য।

জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি সমকালীন সাহিত্য ও শিল্পচর্চার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র ছিল বলে দেশের ও বিদেশের জ্ঞানী গুণী ব্যক্তিরা প্রায়ই এখানে আসতেন। এসূত্রে বিখ্যাত শিল্প সমালোচক আনন্দ কুমারস্বামী এবং ভগিনী নিবেদিতার অন্তরঙ্গ সম্পর্ক গড়ে ওঠে এ পরিবারের সঙ্গে।

কুমারস্বামী মডার্ন রিভিউ পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথের কবিতার অনুবাদ করেন। বিখ্যাত ঐতিহাসিক যদুনাথ সরকারও সে সময়ে রবীন্দ্রনাথের রচনার অনুবাদ করেন ওই পত্রিকায়। ভগিনী  নিবেদিতা ১৯১২ সালের জানুয়ারি সংখ্যার মডার্ন রিভিউতে রবীন্দ্রনাথের ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্পের ইংরেজি অনুবাদ করেন।

এই গল্প পড়ে অভিভূত হন ইংরেজ মনীষী চিত্রশিল্পী উইলিয়ম রোটেনস্টাইন। তিনি রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে ঔৎসুক্য প্রকাশ করে অবনীন্দ্রনাথকে চিঠি লেখেন। রবীন্দ্রনাথের কয়েকটি কবিতার অনুবাদ তখন রোটেনস্টাইনকে পাঠানো হয়।

সে সময়ে দার্শনিক ব্রজেন্দ্রনাথ শীল একটি সম্মেলন উপলক্ষে ইংল্যান্ডে ছিলেন। সেখানকার বিদগ্ধ মহলের আগ্রহ দেখে তিনি রবীন্দ্রনাথকে ইংল্যান্ড যাওয়ার অনুরোধ করেন।

১৯১২ সালের জুন মাসে রবীন্দ্রনাথ ইংল্যান্ড পৌঁছেন রথীন্দ্রনাথ ও পুত্রবধূ প্রতিমা দেবীকে সঙ্গে নিয়ে। শিল্পী রোটেনস্টাইনের সঙ্গে কবির আগেই পরিচয় হয়েছিল কলকাতায় ১৯১১ সালে। রবীন্দ্রনাথ তাঁর হাতে তুলে দেন নিজের করা কবিতার অনুবাদ।

রোটেনস্টাইনের গৃহে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে পরিচয় হয় ইংল্যান্ডের বিশিষ্ট কবি ও পন্ডিতদের। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুজনের একজন ইংরেজ কবি ইয়েটস ইংরেজি গীতাঞ্জলির ভূমিকা লিখে পাশ্চাত্যে রবীন্দ্রনাথের খ্যাতির পথ প্রশস্ত করেন; অন্যজন সি.এফ.এন্ড্রুজ পরবর্তীকালে গান্ধী ও রবীন্দ্রনাথের অন্যতম ভক্ত হন।

আমাদের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

ইয়েটস রবীন্দ্রনাথের গীতাঞ্জলির কবিতা পড়ে শোনান। তারপর ইন্ডিয়া সোসাইটি থেকে ইয়েটসের চমৎকার ভূমিকাসহ ইংরেজি গীতাঞ্জলি প্রকাশিত হয়। ওই সময় রবীন্দ্রনাথের চিত্রাঙ্গদা, মালিনী ও ডাকঘর নাটকেরও ইংরেজি অনুবাদ হয়, ফলে ইউরোপ তাঁকে শ্রেষ্ঠ কবি হিসেবে গ্রহণ করে।

ইংল্যান্ড থেকে রবীন্দ্রনাথ আমেরিকায় যান। ইতিপূর্বে আমেরিকার আরবানায় ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কবিপুত্র রথীন্দ্রনাথকে কৃষি ও পশুপালন বিদ্যাশিক্ষার জন্য পাঠানো হয়। সেই সূত্রে সেখানকার কয়েকজন অধ্যাপকের সঙ্গে কবির পত্রালাপ ছিল।

তাঁরা রবীন্দ্রনাথকে সেখানে বক্তৃতা প্রদানের আমন্ত্রণ জানান। এবার কবি একজন মনীষী ও দার্শনিক হিসেবে বক্তৃতা দেন। বক্তৃতাগুলি সংকলিত হয় ‘Sadhana’ (১৯১৩) গ্রন্থে। আমেরিকা থেকে ইংল্যান্ডে গিয়ে কবি আরও কিছু ভাষণ দেন।

১৯১৩ সালের অক্টোবরে তিনি দেশে ফিরে আসেন। সে বছরই নভেম্বর মাসে গীতাঞ্জলির জন্য রবীন্দ্রনাথকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সাহিত্যসম্মান নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়।

ক্রমাগত অধ্যয়ন, যোগাযোগ ও বিশ্বপরিক্রমার মধ্য দিয়ে রবীন্দ্রনাথ চলমান বিশ্বের বুদ্ধিবৃত্তিক, বৈজ্ঞানিক এবং রাজনৈতিক রূপান্তরের প্রক্রিয়ার সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। ফলে তাঁর কবিমানসের পরিবর্তন এবং কাব্যসাহিত্যে তার প্রভাব অনিবার্য হয়ে ওঠে। গীতাঞ্জলির অধ্যাত্মচেতনার ধারা গীতিমাল্য ও গীতালি (১৯১৪) কাব্যেও বজায় ছিল।

যুগ সন্ধিক্ষণে রবীন্দ্রনাথ 

১৯১৪ সালের পরে তাঁর সাহিত্যসৃষ্টি নতুন দিকে মোড় নেয় এবং তার প্রধান অবলম্বন হয় প্রমথ চৌধুরী সম্পাদিত সবুজপত্র পত্রিকা। সে যুগে সবুজপত্র (১৯১৪) কথ্য ভাষারীতিকে আশ্রয় করে প্রগতিশীল চিন্তার বাহনরূপে দেখা দেয়। এ সময় রবীন্দ্রনাথ তাঁর সাহিত্যরীতির পরিবর্তন এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার নিদর্শন তুলে ধরেন সবুজপত্রে।

বলাকা (১৯১৬) কাব্যের অধিকাংশ কবিতা এ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। গীতাঞ্জলির আধ্যাত্মিক পরিমন্ডল ছাড়িয়ে জগতের চলিষ্ণুতার নতুন তত্ত্ব প্রকাশ পায় এসব কবিতায়। এর মূলে ছিল রবীন্দ্রনাথের পাশ্চাত্য ভ্রমণের অভিজ্ঞতালব্ধ নতুন দৃষ্টিভঙ্গি।

বলাকা কাব্যের পূর্ব পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথের রোম্যান্টিক কবিমানস কখনও সুখ-দুঃখ-বিরহ-মিলনপূর্ণ মানব সংসারে বিচরণ করেছে, আবার কখনও নিরুদ্দেশ সৌন্দর্যলোকে যাত্রা করেছে। এই জীবন ও অরূপের সমন্বয় সাধনজনিত অস্থিরতা থেকে কবি মুক্তি পান বলাকা কাব্যে এসে।

বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত হতে না পারার দুঃখবোধ ও মানসিক দ্বন্দ্ব তাঁর সন্ধ্যাসংগীত কাব্যের মূল সুর। প্রভাতসংগীতে অনন্ত প্রেমে রবীন্দ্রনাথ প্রকৃতি ও মানবকে আহবান জানান। কড়ি ও কোমল কাব্যে রূপে-বর্ণে-ছন্দে সমৃদ্ধ প্রকৃতি এবং আশা-আকাঙ্ক্ষায় বিজড়িত মানুষ তাঁকে আকৃষ্ট করেছে, তবে এ মানুষ বৃহত্তর দেশে কালে পরিব্যাপ্ত বিশ্বমানব।

সোনার তরী’ যুগে সৌন্দর্যের নিরুদ্দিষ্ট আকাঙ্ক্ষার প্রবণতা কবিকে অসম্পূর্ণ মানবের সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে। মানসী, সোনার তরী এবং চিত্রায় সীমা ও অসীমের দ্বন্দ্বের মধ্য দিয়ে কবিমানসের যাত্রা চলেছে।

তিনি জীবের মধ্যেই জীবনেশ্বরকে দেখেছেন। খেয়া থেকে গীতাঞ্জলি পর্যন্ত কবি অধ্যাত্মসাধনায় আত্মনিমগ্ন ছিলেন। বলাকায় প্রচন্ড জীবনাবেগ নিয়ে তাঁর আত্মপ্রকাশ ঘটে। রবীন্দ্র-কবিমানসের এই আকস্মিক পালাবদলের কারণ সমগ্র বিশ্বের মানবিক, দার্শনিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তন।

আমাদের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

এ সময় আধুনিক বিশ্বজীবনবাদের সঙ্গে কবিমানসের গভীর সংযোগ সাধিত হয়। বস্ত্তত জীবনজিজ্ঞাসা ও প্রকাশরীতির বিভিন্ন পর্যায়ে প্রাচ্য চিন্তা এবং পাশ্চাত্য ধারণার সমন্বয় সাধনই রবীন্দ্র-কবিমানসের বৈশিষ্ট্য। বার্গসঁর গতিতত্ত্বের প্রভাব রবীন্দ্রমানসে প্রথম থেকেই ক্রিয়াশীল ছিল। বলাকা নবজীবনবাদের কাব্য।

এতে বিষয়বস্তু ও ভাবগত পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কবি কলাকৌশলেও অভিনবত্ব এনেছেন। বস্তু জগতের পরমাণুর নিরন্তর গতি, অবিরাম প্রবাহ আর ছন্দের স্পন্দন যেন তাঁর চেতনার জগতেও সৃষ্টি করেছে এক প্রবল ছন্দময়তা। তাই মুক্ত ছন্দ ব্যবহারের মধ্য দিয়ে তিনি ভাষা ও ছন্দের নিরীক্ষা করেছেন বিভিন্ন কবিতায়।

রবীন্দ্রনাথের এ পর্বের উপন্যাস চতুরঙ্গ (১৯১৬) ও ঘরে বাইরে  (১৯১৬) ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয় সবুজপত্রে। এ সময় বাংলা সাহিত্যের দিক-পরিবর্তন যেমন তাৎপর্যবহ, তেমনি রবীন্দ্রনাথের মনোজগতের দিক-পরিবর্তনও গুরুত্বপূর্ণ। বলাকা কাব্যের জীবনতত্ত্বকেই কবি রূপ দিয়েছেন ফাল্গুনী (১৯১৬) নাটকে।

জাপান ভ্রমণে রবীন্দ্রনাথ 

১৯১৬ সালে কবি জাপান যান। এই ভ্রমণে তাঁর সঙ্গে ছিলেন দুজন ভারত অনুরাগী উইলিয়ম পিয়ারসন ও সিএফ এন্ড্রুজ এবং তরুণ শিল্পী মুকুল দে। জাপান সংস্কৃতির সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের পরিচয় ঘটেছিল কলকাতায় চিত্রশিল্পী ওকাকুরার সান্নিধ্যে।

তখন তিনি জাপানের মহৎ দিকটিকেই দেখেছিলেন। কিন্তু এবার তাঁর চোখে পড়ে বিপরীত চিত্র। তাই তিনি রচনা শুরু করেন “Nationalism” বিষয়ক ভাষণগুলি। সেই ভাষণ তিনি আমেরিকাতেও পড়েন।

এছাড়া সেখানে কবি তাঁর শিক্ষার আদর্শ, ব্যক্তিত্বের স্বরূপ, ব্যক্তি ও বিশ্বের সম্পর্ক প্রভৃতি বিষয়ে বক্তৃতা দেন, যেগুলি সংকলিত হয় Personality (১৯১৭) নামক  গ্রন্থে।

বিদেশ ভ্রমণের পর রবীন্দ্রনাথের জীবনের স্মরণীয় ঘটনা ইংরেজ প্রদত্ত ‘নাইট’ উপাধি প্রত্যাখ্যান, যা তাঁকে প্রদান করা হয় ১৯১৫ সালে।

১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল রাউলাট অ্যাক্ট-এর বিরুদ্ধে পাঞ্জাবের জালিয়ানওয়ালাবাগে এক জনসমাবেশে ভারতীয়দের ওপর ব্রিটিশ পুলিশ আকস্মিকভাবে গুলি চালিয়ে অসহায় ব্যক্তিদের হত্যা করে। ইংরেজের এই অত্যাচারী মূর্তি দেখে রবীন্দ্রনাথ ভাইসরয়কে এক পত্র লিখে ‘নাইট’ উপাধি ফিরিয়ে দেন।

শান্তিনিকেতন এবং বিশ্বচিন্তার সমন্বয়  

আমেরিকা ভ্রমণের অভিজ্ঞতার ফলে কবির শান্তিনিকেতনের ব্রহ্মচর্যাশ্রমের ধারণায় কিছু পরিবর্তন ঘটে এবং বিশ্বভারতীর সত্যিকার রূপটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। জীবনের এ পর্বে তিনি বিশ্বভারতীর বিদ্যাচর্চাকে ব্রহ্মচর্যাশ্রমের বালকপাঠ্য শিক্ষাস্তর থেকে উচ্চতর স্বাধীন চর্চায় উন্নীত করেন।

ভারতীয় দর্শন ও শিক্ষার সুসমন্বয়ে একটি পরিপূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তনই ছিল তাঁর লক্ষ্য। এখানে অধ্যয়ন ও গবেষণার সঙ্গে সঙ্গে সঙ্গীত ও চিত্রকলা চর্চার ব্যবস্থা হয়। ১৯২১ সালে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে বিশ্বভারতী পরিষদ গঠন এবং একটি স্থায়ী নিয়মাবলি রচনা করে এই বিদ্যায়তনকে কবি দেশের হাতে তুলে দেন।

বিশ্বভারতী’, কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়। সে সময়েই বিশ্বভারতীর একটি মূল অঙ্গ হিসেবে শান্তিনিকেতন থেকে দুই মাইল দূরে সুরুল গ্রামে কবি প্রতিষ্ঠা করেন শ্রীনিকেতন কৃষি ও পল্লিসংগঠন। এখানে শুরু হয় পশুপালন, তাঁতশিল্প, চাষাবাদ, কুটিরশিল্প প্রভৃতি উদ্যোগ।

এ ছাড়া গ্রামের মানুষের উন্নতির জন্য গড়ে ওঠে গ্রামীণ পাঠাগার, হাসপাতাল, সমবায় ব্যাংক, নলকূপ, শিল্পভবন প্রভৃতি। রবীন্দ্রনাথের নিকট বিশ্বভারতীর একটি অর্থ ছিল বিশ্বকর্ম এবং অন্য অর্থ পৃথিবীজোড়া বিশ্ববোধের প্রকাশ। এরূপ ধারণার বশবর্তী হয়েই এ সময় এখানে যোগ দেন পিয়ারসন ও কৃষিবিজ্ঞানী লিওনার্ড এলমহার্স্ট।

শ্রীনিকেতনের উন্নয়নে এলমহার্স্টের অর্থসাহায্য বিশেষভাবে স্মরণীয়। তাঁর স্ত্রী ডরথি স্ট্রেইটের বিপুল ও দীর্ঘকালব্যাপী দানে সম্ভব হয়েছিল শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠার কাজ।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্বকবি হিসেবে খ্যাত। তিনি তাঁর গল্প, কবিতা, গান, উপন্যাস প্রভৃতি সবকিছু মিলিয়ে সাধারণ পাঠকের মনে চির অমর হয়ে আছেন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কবির ভক্তরা তাঁকে স্মরণ করে যাবেন প্রতিটি মুহূর্তে।

শান্তি নিকেতন এবং বিশ্বভারতী নিয়ে রবীন্দ্রনাথের চিন্তা চেতনা, শুরুর দিকের সংগ্রাম সবকিছু নিয়ে আমরা আলোচনা করবো তৃতীয় পর্বে। আমাদের সাথেই থাকুন। 

About the author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Latest Posts

  • সর্দি থেকে মুক্তির উপায়, নাকের এলার্জি দূর করার উপায় | দ্রুত উপশম পেতে ঘরোয়া চিকিৎসা

    সর্দি থেকে মুক্তির উপায়, নাকের এলার্জি দূর করার উপায় | দ্রুত উপশম পেতে ঘরোয়া চিকিৎসা

    নাকের এলার্জি হচ্ছে নাকের ঝিল্লি প্রদাহের কারণে নাকের একটি সমস্যা। এটি সারা বিশ্বব্যাপী একটি স্বাস্থ্য সমস্যা। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ নাকের এই রোগে আক্রান্ত। নাকের এলার্জি কোন মারাত্মক ক্ষতিকর রোগ না হলেও এ রোগের কারণে দৈনন্দিন জীবন প্রবাহ ব্যাহত হয়। এলার্জিজনিত সর্দি এবং হাঁচি জীবনকে অতিষ্ট করে তোলে। এই রোগে হঠাৎ…

    Read more

  • কফ, কাশি দূর করার উপায় | সঠিক চিকিৎসাই হতে পারে কাশি দূরীকরণের মাধ্যম

    কফ, কাশি দূর করার উপায় | সঠিক চিকিৎসাই হতে পারে কাশি দূরীকরণের মাধ্যম

    গলায় বুকে কফ জমে থাকা বেশ বিরক্তিকর একটি সমস্যা। ঋতু পরিবর্তনের ফলে আবহাওয়া পরিবর্তন হয়। আর আবহাওয়ার এই দ্রুত পরিবর্তন আমাদের শরীর খাপ খাওয়াতে পারে না, যার কারণে সৃষ্টি হয় ঠান্ডা জ্বর ও সর্দি-কাশির। ঠান্ডা সর্দি কাশি এগুলো আমাদের কাছে খুব পরিচিত রোগ হলেও এই ঠান্ডা সর্দি কাশি থেকে আমাদের দেহে অনেক বড় বড় অসুখ…

    Read more

  • ওজন কমানোর উপায় ডায়েট চার্ট | সুস্থ স্বাভাবিক জীবন

    ওজন কমানোর উপায় ডায়েট চার্ট | সুস্থ স্বাভাবিক জীবন

    সুস্থ স্বাভাবিক এবং রোগমুক্ত জীবন আমরা কে না চাই। আর এই সুস্থ সুন্দর জীবন যাপন করার একমাত্র উপায় হচ্ছে শারীরিক ওজন ঠিক রাখা। কেননা ওজন বেড়ে গেলে যে কোন রোগের ঝুঁকি ও বেড়ে যায়। এজন্য বাড়তি ওজন অনেকের মানসিক অসুস্থির প্রধান কারণ। তাই রোগ প্রকোপ কমাতে এবং মানসিক শান্তির উদ্দেশ্যে আমাদের সকলের উচিত শারীরিক ওজন…

    Read more