পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি কারা? এ বিষয়ে পাঠকের মতামতের ভিত্তিতে করা একটি তালিকায় উঠে এসেছেন ইতিহাস সেরা এমন ১০ জন ব্যক্তি। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজের মাধ্যমে তারা ইতিহাসে রেখে গেছেন তাদের দুর্দান্ত প্রভাব।
এই তালিকায় আব্রাহাম লিংকনের মত মহান নেতা যেমন স্থান পেয়েছে, তেমনি আছে নিষ্ঠুর শাসক জোসেফ স্ট্যালনের নাম।
তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক, ইতিহাসের সবচেয়ে প্রভাবশালী ১০ জন ব্যক্তির তালিকায় কে কে আছেন।
ইতিহাসখ্যাত ১০ প্রভাবশালী ব্যক্তি
ইতিহাসের বিখ্যাত ব্যক্তিদের কৃতকর্মের মাধ্যমে কখনও দেশের উন্নতি হয়েছে, আবার কখনও দেশ যুদ্ধের সম্মুখীন হয়েছে। এমনই ১০ ব্যক্তির কথা অভিযাত্রীর পাতায় স্থান পেয়েছে,
১. অ্যাডলফ হিটলার (১৮৮৯-১৯৪৫)
ইতিহাসে পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তির তালিকায় প্রথমেই আছেন অ্যাডলফ হিটলার। অস্ট্রীয় বংশোদ্ভূত জার্মান এই রাজনীতিবিদের জন্ম ১৮৮৯ সালের ২০ এপ্রিল অস্ট্রিয়ার হাঙ্গেরিতে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলার জার্মানির হয়ে যুদ্ধে অংশ নেন এবং যুদ্ধে তার সাহসিকতা ও বীরত্বের জন্য ১৯১৮ সালে তাকে ‘ফার্স্ট ক্লাস আয়রন ক্রস’ দেওয়া হয়।
১৯১৯ সালে তিনি জার্মান ওয়ার্কাস পার্টিতে সামরিক রাজনৈতিক এজেন্ট হিসেবে কাজ শুরু করেন। এক বছরের মধ্যে তিনি পার্টি প্রধান হয়ে ওঠেন এবং দলের নতুন নাম দেন ‘ন্যাশনাল ওয়ার্কাস পার্টি’।
হিটলার ১৯৩৩ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জার্মানির চ্যান্সেলর এবং ১৯৩৪ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত সে দেশের ফিউরার ছিলেন। ১৯৩৯ সালে তার নেতৃত্বে জার্মানরা পোল্যান্ড জয় করে নিলে ব্রিটেন ও ফ্রান্স জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।
এভাবেই সূচনা ঘটে ২য় বিশ্বযুদ্ধের। হিটলারের রাজ্য জয় ও ইহুদী বিদ্বেষের কারণে লক্ষ লক্ষ নিরপরাধ মানুষকে প্রাণ হারাতে হয়। এ সময় পরিকল্পনামাফিক হত্যা করা হয় প্রায় ৬০ লক্ষ ইহুদিকে। ইতিহাসে এই ঘটনা ‘হলোকাস্ট’ নামে পরিচিত।
২. কার্ল লিনিয়াস (১৭০৭-১৭৭৮)
পৃথিবীর সর্বকালের সেরা বিজ্ঞানীদের মধ্যে অন্যতম হলেন কার্ল লিনিয়াস। তিনি একাধারে একজন উদ্ভিদবিজ্ঞানী, চিকিৎসক ও প্রাণিবিজ্ঞানী। তিনিই প্রথম জীবজগতকে উদ্ভিদ ও প্রাণি এই দুই শ্রেণীতে বিভক্ত করেন বলে তাকে আধুনিক শ্রেণীবিন্যাসের জনক বলা হয়।
উদ্ভিদ ও প্রাণিবিজ্ঞানে অবদানের পাশাপাশি তিনি দ্বিপদী নামকরণ ও আধুনিক বাস্তুবিজ্ঞানেও বিশেষ ভূমিকা রাখেন।
১৭০৭ সালের ১৩ই মে, দক্ষিণ সুইডেনের স্মালান্দের এক গ্রামে লিনিয়াসের জন্ম। তিনি তার শিক্ষাজীবনের অধিকাংশ সময় কাটান Uppsala University তে। এখান থেকেই তিনি চিকিৎসা বিজ্ঞানের উপর ডিগ্রী অর্জন করেন।
১৭৩০ সালে তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে নিযুক্ত হন এবং শ্রেণীবিন্যাস বিষয়ে গবেষণা শুরু করেন। বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণির নামকরণের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য তাকে দ্বিপদী নামকরণের প্রবক্তা বলা হয়।
১৭৫৮ সালে প্রকাশিত Systema Naturae বইতে তিনি ৭,৭০০ প্রজাতির উদ্ভিদ ও ৪,৪০০ প্রজাতির প্রাণীর নামকরণ করেন। এছাড়া তার লেখা উল্লেখযোগ্য তিনটি বই হল Species Plantarum, Genera Plantarum ও Philosophia Botanica.
১৭৭৮ সালের ১০ই জানুয়ারী আপসালা ইউনিভার্সিটিতে এই মহান বিজ্ঞানী মৃ্ত্যুবরণ করেন।
৩. আব্রাহাম লিংকন (১৮০৯-১৮৬৫)
বিশ্ব বিখ্যাত ব্যক্তিদের মধ্যে আব্রাহাম লিংকন একজন। তিনি ১৮০৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকি রাজ্যের হার্ডিন কাউন্টিতে জন্মগ্রহণ করেন। অতি সাধারণ পরিবারে বেড়ে ওঠা লিংকন ছিলেন স্বশিক্ষিত এবং অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী।
গণতন্ত্রের মৌলিক কাঠামো প্রদান এবং আমেরিকার অখন্ডতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে তাকে এখনো আমেরিকার আদর্শ বলে বিবেচনা করা হয়। ১৮৬৫ সালের ১৫ই এপ্রিল লিংকন জন উইলকেস বুথ নামে আততায়ীর হাতে নিহত হন।
লিংকন তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন ব্ল্যাক হ্যাক যুদ্ধের পর থেকে। ১৮৪৭ থেকে ১৮৪৯ সাল পর্যন্ত তিনি মার্কিন হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৮৬১ সালে তিনি রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হিসাবে আমেরিকার ১৬ তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।
একই বছর দাস প্রথাকে কেন্দ্র করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে তিনি উত্তরাঞ্চলীয় ইউনিয়ন বাহিনীর নেতৃত্ব দেন এবং দক্ষিণ কনফেডারেট জোটকে পরাজিত করেন। ১৮৬৩ সালে লিংকন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাস প্রথার অবসান ঘটিয়ে প্রায় ৩৫ লাখ ক্রীতদাস মুক্ত করেন।
৪. ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট (১৮৮২-১৯৪৫)
আমেরিকার ইতিহাসের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাষ্ট্রপতিদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন ফ্রাঙ্কলিন ডিলেনো রুজভেল্ট। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তিনিই একমাত্র প্রেসিডেন্ট, যিনি ৩ বার এ পদের জন্য নির্বাচিত হন এবং দীর্ঘ ১২ বছর ধরে প্রেসিডেন্ট হিসেবে সফলভাবে তার দায়িত্ব পালন করেন।
আধুনিক যুক্তরাষ্ট্রের স্থপতি হিসেবে অভিহিত রুজভেল্ট ছিলেন একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক এবং সুদক্ষ কূটনীতিবিদ।
১৮৮২ সালের ৩০ জানুয়ারি, রুজভেল্ট নিউইয়র্কের হাইড পার্কের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবার ১১ বছর আগে পোলিও তে আক্রান্ত হয়ে তার কোমরের নিচের অংশ চিরতরে অবশ হয়ে যায়।
১৯৩৩ সালে তিনি প্রথমবারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ৩২ তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন। এসময় দেশটির রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল শোচনীয়। ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় উইনস্টন চার্চিল এবং জোসেফ স্ট্যালিনের মত বিশ্বনেতার সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেন তিনি।
তিনিই প্রথম জাতিসংঘের প্রস্তাবক ছিলেন। ১৯৪৫ সালের ১২ই এপ্রিল জর্জিয়ার ওয়ার্ম স্প্রিং-এ ৬৩ বছর বয়সী রুজভেল্ট মৃত্যুবরণ করেন।
৫. উইনস্টন চার্চিল (১৮৭৪-১৯৬৫)
যুক্তরাজ্য ও বিশ্বের রাজনৈতিক ইতিহাসের একজন সম্মানিত ও দায়িত্বশীল রাজনীতিবিদ হলেন উইনস্টন চার্চিল। তিনি ১৯৪০-১৯৪৫ এবং ১৯৫১-১৯৫৫ এই দুই মেয়াদে ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুক্তরাজ্যকে নেতৃত্ব প্রদানের জন্যই তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিত। একজন ব্রিটিশ হিসেবে তিনি প্রথম সম্মানসূচক আমেরিকার নাগরিকত্ব লাভ করেন। ২০০২ সালে বিবিসির এক জরিপে চার্চিল সর্বকালের সেরা ব্রিটেনবাসী হিসেবে মনোনীত হন।
উইনস্টন চার্চিল ১৮৭৪ সালের ৩০ শে নভেম্বর ইংল্যান্ডের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ভারত, সুদান, মিশরসহ বেশ কয়েকটি দেশের মিলিটারি সার্ভিসে তিনি নিযুক্ত ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি নাৎসি বাহিনীর হাত থেকে কৌশলে ব্রিটেনকে রক্ষা করেন।
সুদক্ষ রাজনীতিবিদ হওয়ার পাশাপাশি চার্চিল একজন সফল লেখকও ছিলেন। তিনিই একমাত্র ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী, যিনি ১৯৫৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন। চার্চিলের লেখা ৪০টির বেশি বইয়ের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্ব পেয়েছে ৬ খন্ডে প্রকাশিত ২য় বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাস বইটি। ১৯৬৫ সালের ২৪ শে জানুয়ারি ৯০ বছর বয়সে চার্চিল মারা যান।
৬. রাণী ভিক্টোরিয়া (১৮১৯-১৯০১)
১৮১৯ সালের ২৪ শে মে লন্ডনের কেনসিংটন প্রাসাদে জন্মগ্রহণ করেন ইতিহাসের সবচেয়ে বিখ্যাত রানীদের মধ্যে অন্যতম আলেকজান্ড্রিনা ভিক্টোরিয়া। তিনি ছিলেন যুক্তরাজ্য ও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের রাণী। সকলের কাছে তিনি রানী ভিক্টোরিয়া নামে অধিক পরিচিত।
ইতিহাসের পাতায় তাঁর শাসনামলকে অভিহিত করা হয় ভিক্টোরিয়া যুগ হিসেবে। এ যুগে ব্রিটেনে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও শিল্পায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিবর্তন ঘটে।
১৮৩৭ সালের ২৮ জুন তিনি যখন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সিংহাসনে বসেন, তখন তার বয়স মাত্র ১৮ বছর। সে সময় ব্রিটেনের রাজতন্ত্র অনিশ্চিত হয়ে পড়লে তিনি বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে রাজ পরিবারের ভূমিকা নতুন করে নির্ধারণ করেন।
তার আমলে ব্রিটিশ সাংবিধানিক রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সবচেয়ে বেশি বিস্তৃতি ঘটে। সে সময় ব্রিটেনের সবচেয়ে সমৃদ্ধ উপনিবেশ ছিল ভারত। ১৮৭৬ সালে তিনি ভারত সম্রাজ্ঞী উপাধি ধারণ করেন। দীর্ঘ ৬৩ বছর ধরে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য শাসন করার পর ১৯০১ সালে রাণী ভিক্টোরিয়া মৃত্যুবরণ করেন।
৭. জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৩২-১৭৯৯)
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি ছিলেন জর্জ ওয়াশিংটন। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সেরা তিন রাষ্ট্রপতির একজন হিসেবে স্থান অধিকার করেছেন তিনি। আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ওয়াশিংটন কন্টিনেন্টাল আর্মির সর্বাধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। বিশ্বের ইতিহাসে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতির জনক হিসেবে অধিক পরিচিত।
জর্জ ওয়াশিংটনের জন্ম ১৭৩২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বর্তমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায়। ১৭৫৪ সালে তিনি ফরাসি ও ভারতীয় যুদ্ধে ভার্জিনিয়ার ব্রিটিশ উপনিবেশ হিসেবে সেনাবাহিনীতে তার কর্মজীবন শুরু করেন।
১৭৫৫ সালে তাকে ভার্জিনিয়া রেজিমেন্টের কর্নেল এবং ভার্জিনিয়ার সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব দেয়া হয়। তার রেজিমেন্ট ১০ মাসে ২০টি যুদ্ধে জয়লাভ করে। আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধে জয়লাভের পর তিনি দেশটির প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
১৭৯২ সালে তার অসাধারণ যোগ্যতা প্রদর্শনের জন্য তাকে ২য় বারের মত প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা হয়।
৮. নেপোলিয়ন (১৭৬৯-১৮২১)
ফরাসি প্রজাতন্ত্রের প্রথম কনসল নেপোলিয়ন বোনাপার্ট ১৭৬৯ সালের ১৫ আগস্ট ফ্রান্সের করসিকার এজাক্সিউ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি সেকেন্ড লেফট্যানেন্ট পদে ভূষিত হন। ১৭৮৯ সালে ফরাসি বিপ্লবের পূর্ব পর্যন্ত নেপোলিয়ন ভ্যালেন্স এবং এক্সনে সেনারক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন।
১৭৯৫ সালে তাকে টুইলারিস প্রাসাদে প্রতিষ্ঠিত কনভেনশনের রক্ষায় গঠিত বাহিনীর দায়িত্ব দেয়া হয়।
তাঁর নেতৃত্বে ফরাসী সেনাবাহিনী এক দশকের বেশি সময় ধরে সকল ইউরোপীয় শক্তির সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। তিনি ইউরোপের অধিকাংশ অঞ্চল নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসেন। ১৮১৫ সালে ওয়াটার-লু যুদ্ধে পরাজিত হবার পর জীবনের শেষ ছয় বছর কাটে ব্রিটিশদের তত্ত্বাবধানে আটলান্টিক মহাসাগরের দ্বীপ সেন্ট হেলেনাতে।
৯. সিডনি লী (১৮৫৯-১৯২৬)
সিডনি লী একাধারে একজন ইংরেজি জীবনীকার, লেখক এবং সমালোচক। ১৮৫৯ সালের ৫ ডিসেম্বর লন্ডনের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে তাঁর জন্ম। ১৮৮৩ সালে তিনি Dictionary of National Biography-র সহকারী সম্পাদক ছিলেন।
১৮৯১ সালে লেসলি স্টিফেন অবসারে যাওয়ার পর তিনি সম্পাদক পদে নিযুক্ত হন। লী অভিধানে প্রায় ৮০০টির বেশি আর্টিকেল লেখেন। এছাড়া তাঁর উল্লেখযোগ্য জীবনীমূলক বই হল ‘Life of Queen Victoria, Shakespeare, the Modern stage’, ‘King Edward VII’ ইত্যাদি। ১৯১৩ থেকে ১৯২৪ সাল পর্যন্ত তিনি ইস্ট লন্ডন কলেজে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে প্রভাষক হিসেবে নিযুক্ত হন।
১০. জোসেফ স্ট্যালিন (১৮৭৮-১৯৫৩)
বিশ্বের সবচেয়ে নিষ্ঠুর শাসকের মধ্যে অ্যাডলফ হিটলারের পরই রয়েছে জোসেফ স্ট্যালিনের নাম। তিনি একজন রুশ সাম্যবাদী রাজনীতিবিদ। লৌহমানব নামে খ্যাত নিষ্ঠুর শাসক জোসেফ স্ট্যালিনের জন্ম ১৮৭৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর একটি সাধারণ পরিবারে। তাঁর আসল নাম জোসেফ বেসারিওনি জুগাসভিলি। নিষ্ঠুর হলেও জোসেফের কিছু অনুপ্রেরণামূলক উক্তি মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে।
তিনি ১৯২২ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
সোভিয়েত ইউনিয়নের ইতিহাসে এই সময়ে তাঁর নেতৃত্বে প্রচলিত রাজনৈতিক মতবাদ স্তালিন মতবাদ নামে পরিচিত। তিনি দ্রুত শিল্পায়ন ও কৃষিকাজের মাধ্যমে সোভিয়েত ইউনিয়নকে অল্প সময়ের মধ্যে শিল্পোন্নত দেশে পরিণত করেন।
১৯৩০ সালে তিনি তার ক্ষমতা শক্ত করার জন্য নিপীড়ন শুরু করেন। ফলে কমিউনিস্ট পার্টির শত্রু সন্দেহে অনেক মানুষকে হত্যা করা হয়। এছাড়া তার সময়ে অর্থনৈতিক উত্তান পতনের কারণে দুর্ভিক্ষেও মারা যায় অনেক মানুষ।
তার শাসনকালে সোভিয়েত ইউনিয়ন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেয় এবং নাৎসি বাহিনীর পরাজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বিভিন্ন সময়ে অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি বিশ্বের ইতিহাসে লিখিয়েছেন তাঁদের নাম। সবাই যার যার কাজের মাধ্যমেই নিজেদের শীর্ষ স্থানে নিতে পেরেছেন। এমন ১০ ব্যক্তিকে নিয়েই সাজানো হয়েছে অভিযাত্রীর পাতা।
Leave a Reply