২০১৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচের কথা নিশ্চয়ই মনে আছে আর্জেন্টিনার ভক্তদের। জার্মানির বিপক্ষে সেই ম্যাচটি ইনজুরির কারণে খেলতে পারেননি অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। ডাগআউটে বসে দেখেছেন ১১৩ মিনিটে গোল খেয়ে বেদনাদায়ক এক পরাজয়। আর্জেন্টিনার ভক্তরা সেই ম্যাচে তাঁকে কতটা মিস করেছিলো সেটা শুধু তারাই জানে।
সাত বছর পর আবারও ব্রাজিলের মাটিতে কোপা আমেরিকার ফাইনাল খেললো আর্জেন্টিনা। এবার আর বাইরে থাকতে হয়নি মারিয়াকে। পুরো টুর্নামেন্টে তান্ডব চালানো আনহেল মারিয়াকে ফাইনালে শুরুর একাদশে জায়গা দিয়েছেন আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি। আর তাতেই নাজিমাত!
ফাইনালে ব্রাজিলের বিপক্ষে একমাত্র গোলটি করে বসলেন তিনি আর আর্জেন্টিনার সাথে নিজেও পেলেন শিরোপার স্বাদ। এই গোলের সুবাদে ফাইনাল ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও জিতেছেন তিনি। আর্জেন্টিনা দলের এই বিষ্ময় ফুটবলার দু-পায়েই সমান ভাবে দক্ষ। লেফট উইং রাইট উইং এটাকিং মিডে সমান ভাবে দাপিয়ে বেড়ান তিনি। আর্জেন্টিনা দলের অন্যতম এই ফুটবলারের জীবনী নিয়েই আমাদের আজকের আয়োজন।
ডি মারিয়ার জন্ম ও বেড়ে উঠা
ডি মারিয়ার পুরো নাম ‘আনহেল ফাবিয়ান ডি মারিয়া’ । তিনি ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৮ সালে আর্জেন্টিনার সান্তা ফে প্রদেশের রোজারিও শহরে এক নিম্নবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তবে তার বেড়ে উঠা পাড্রিয়েল শহরে। মা ডায়ানা হার্নান্দেজ এবং পিতা মিগুয়েল ডি’র তিন সন্তানের মধ্যে একজন তিনি। তার বাবা-মা সেখানে স্থানীয় একটি কয়লা কারখানায় কাজ করতেন।
জন্মের পর থেকে অ্যাঞ্জেল মারিয়া অস্বাভাবিক দুরর্ন্ত ছিলেন। দেখতে কিছুটা রোগা পাতলা হলেও তার শারীরিক শক্তি ছিলো প্রচুর। তাই তিন বছর বয়সে একজন ডাক্তার তাকে ফুটবল খেলার জন্য পরামর্শ দেন কিছুটা শান্ত হওয়ার জন্য। সেই থেকেই তিনি ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। পরিবারের খুব স্বল্প উপার্জনের কারনে মারিয়ার শখকে সামলে রাখা তার বাবা-মার পক্ষে কঠিন ছিল। তিনি ফুটবল খেলেও তাঁর বাবা-মাকে কয়লা কারখানায় তাদের কাজ করতে সহায়তা করতেন। এমনকি তাকে এক জোড়া বুট জুতো কিনে দেয়া তার পরিবারের পক্ষে কঠিন ছিলো।
খেলোয়াড় অ্যাঞ্জেল মারিয়া
৪ বছর বয়সেই তিনি লোকাল ক্লাব টোরিতোতে প্র্যাক্টিস শুরু করেন। ৭ বছর বয়সে তিনি রোজারিও সেন্ট্রাল একাডেমিতে যোগ দেন। তারপর ১৩ বছর বয়সে যোগ দেন রোজারিও সেন্ট্রালের ইউথ ক্লাবে। ১৭ বছর বয়সে অর্থাৎ ২০০৫ সালে রোজারিও সেন্ট্রালে অভিষেকের মাধ্যমে খেলোয়াড় অ্যাঞ্জেল মারিয়া আর্জেন্টিনা প্রিমিয়ার ডিভিশনে তাঁর পেশাদারী ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু করেন।
২০০৭ সালে তিনি রাশিয়ান প্রিমিয়ার লীগের ক্লাব রুবিন কাজানে খেলার সুযোগ পান। প্রথম রাজি হলেও, পরে তিনি তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। ২০০৭ ফিফা অনূর্ধ্ব ২০ বিশ্বকাপে দুর্দান্ত নৈপূন্যের কারণে তিনি বিভিন্ন ইউরোপীয় দলের নজরে আসেন। তখন তাকে ৬ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে কিনে নেয় পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকা।
২০০৭ সালের জুলাইয়ে বেনফিকাতে যোগ দেন মারিয়া। এখানে তিনি একজন উইংগার হিসেবে খেলেন। খুব দ্রুতই তিনি তার সামর্থের জানান দেন। ২০০৯ সালের অক্টোবরে অ্যাঞ্জেল মারিয়া বেনফিকার সাথে ২০১৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত নতুন করে চুক্তি স্বাক্ষর করেন। চুক্তিতে তাঁর মূল্য রাখা হয় ৪০ মিলিয়ন ইউরো। এর কয়েকদিন পর দিয়েগো মারাদোনা তাকে আর্জেন্টিনার সুপারস্টার বলে ঘোষণা করেন।
২০১০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি, লেইক্সোস এসসি – এর বিপক্ষে তিনি তাঁর প্রথম হ্যাট্রিক করেন। এই হ্যাট্রিক করে মারিয়া স্পেনিশ জায়েন্ট রিয়াল মাদ্রিদের নজরে চলে আসেন।
বেনফিকার হয়ে ৩ টি সিজন খেলে ৭৬টি ম্যাচে ৬টি গোল করেন এবং সাথে অনেকগুলো এসিস্টও করেছিলেন।
২০১০ সালের জুন মাসে রিয়াল মাদ্রিদ তাদের ওয়েবসাইটে একটি পোস্টের মাধ্যমে মারিয়াকে বেনফিকা ক্লাব থেকে ট্রান্সফার করার কথা জানায়। মারিয়াকে তাদের দলে ভেরাতে ২৫ মিলিয়ন ইউরো ব্যয় করতে হয়। তিনি ৫ বছরের চুক্তিতে যোগ দেন রিয়াল মাদ্রিদে।
২০১০-২০১১ মৌসুমটা রিয়াল মাদ্রিদে মারিয়ার জন্য ছিলো দুর্দান্ত।
২০১০ এর ৪ আগস্ট, ক্লাব আমেরিকার বিপক্ষে একটি প্রীতি ম্যাচে তার অভিষেক হয়। তারপর ২৯ আগস্ট, মায়োর্কার বিপক্ষে তার লা লিগায় অভিষেক হয়। ১৮ সেপ্টেম্বর, সোসিয়েদাদের বিপক্ষে খেলায় তিনি লীগে তার প্রথম গোল করেন। এর দশ দিন পর চ্যাম্পিয়নস লীগে অক্সারের বিপক্ষে রিয়াল মাদ্রিদ ১–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে। খেলার একমাত্র গোলটি করেন অ্যাঞ্জেল মারিয়া।
তারপর তাঁর নৈপুণ্য আর পায়ের জাদুতে একের পর এক গোল এবং এসিস্ট করতে থাকেন। চ্যাম্পিয়নস লীগের রাউন্ড অব ১৬ এর দ্বিতীয় লেগের খেলায় অলিম্পিক লিওনাইসের বিপক্ষে তিনি একটি গোল করেন। খেলায় রিয়াল মাদ্রিদ ৩–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে এবং সাত বছরের মধ্যে প্রথমবারের মত রিয়াল মাদ্রিদ কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছায়।
চ্যাম্পিয়নস লীগের কোয়ার্টার ফাইনালে টটেনহামের বিপক্ষেও মারিয়া একটি গোল করেন। এই মৌসুমেই কোপা দেল রে’র ফাইনালে বার্সেলোনার বিপক্ষে খেলায় অতিরিক্ত সময়ের ৩১তম মিনিটে তাকে লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ ছাড়তে বলেন। খেলায় রিয়াল মাদ্রিদ ১–০ ব্যবধানে জয় লাভ করে।
মারিয়ার সহায়তায় খেলার একমাত্র গোলটি করেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। ফলে রিয়াল মাদ্রিদ কোপা দেল রে শিরোপা জেতে। এটিই ছিল রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে তাঁর প্রথম শিরোপা। এই সিজনে তিনি মোট ৫৩ ম্যাচে ৯ টি গোল সাথে অনেকগুলো এসিস্টও করেন ।
২০১১–১২ মৌসুমের প্রথম দিক অ্যাঞ্জেল মারিয়ার খুব একটা ভাল যায়নি। গ্রীষ্মকালীন বিরতির পর লীগের দ্রুততার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে যথেষ্ট সমস্যায় পড়তে হয় তাকে। ২০১১ সালের অক্টোবর থেকে কাকা এবং ওজিলের চেয়ে তিনিই ছিলেন জোসে মরিনহোর প্রথম পছন্দ।
এই সিজনের প্রথমার্ধটা ভালো না গেলেও শেষার্ধটা ছিলো দুর্দান্ত। ফলস্বরূপ রিয়াল মাদ্রিদ জয় করে নেয় লা-লিগার শিরোপা।
২০১২-১৩ মৌসুমে মারিয়া প্রথম গোল করেন ক্যাম্প ন্যুতে বার্সেলোনার বিপক্ষে। এই মৌসুম তার সেরা সময় ছিলনা, তবুও তিনি কিছু গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে জ্বলে উঠেছিলেন। এই মৌসুমে তিনি মোট ৫৪টি খেলায় মাঠে নামেন এবং ১৭টি এসিস্টের সাথে ১০টি গোল করেন।
২০১৩-১৪ মৌসুমে ফাবিয়ান মারিয়া চ্যাম্পিয়ান্স লীগের গ্রুপ স্টেজে কোপেনহেগেনের বিপক্ষে ২ টি গোল করে রিয়াল মাদ্রিদকে ৪-০ গোলে জয় এনে দেন। একই আসরে চ্যাম্পিয়ন লীগ ফাইনালে রিয়াল ৪-১ গোলে এথল্যাটিকো মাদ্রিদকে পরাজিত করে ১২ বছর পর ১০ম বারের মত শিরোপা জিতে নেয়। এই ম্যাচেও দুর্দান্ত পারফরমেন্সে ফাবিয়ান মারিয়া উয়েফা ম্যান অফ দ্যা ফাইনাল নির্বাচিত হন। একই সাথে উয়েফা টীম অফ দ্যা ইয়ারে জায়গা করে নেন। এই সিজনেই উয়েফা সুপার কাপও জিতে নেন তিনি।
২০১৪ সালের কোপা দেল রে এর ফাইনালে বার্সেলোনার বিপক্ষে ২-১ গোলে জয়ের প্রথম গোলটি করেন এবং মাদ্রিদ কোপা দেল রে এর শিরোপা জিতে নেয়। এই সিজনে তিনি লা লীগার সর্বোচ্চ ১৭ টি এসিস্ট করেন।
এই সিজনের মাঝে রিয়াল মাদ্রিদ তাদের ম্যানেজার পরিবর্তন করে ইতালির সাবেক ম্যানেজার ও ফুটবলার কার্লোস আন্সেলট্টিকে নতুন ম্যানেজার হিসেবে নিযুক্ত করেন। এই কোচের ধরণ ছিলো কিছুটা ভিন্ন। তাই নতুন ফর্মেশন ৪-৩-৩ এ ফাবিয়ান মারিয়ার পজিশন চলে আসে উইংগার থেকে মিডফিল্ড পজিশনে। এই পজিশনে মাদ্রিদের আরো ভালো কিছু ফুটবলার থাকায় অ্যাঞ্জেল মারিয়াকে প্রায় প্রতি ম্যাচেই সাইড ব্যঞ্চে বসিয়ে রাখা হত। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে তিনি ১৯৪ ম্যাচে ৩৭ টি গোল করেন।
২৬ আগস্ট ২০১৪ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তাকে সেই সময়ের পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বোচ্চ ট্রান্সফার ফি প্রায় ৬০ মিলিয়ন পাউন্ড দিয়ে ৫ বছরের জন্য তাদের দলে ভেরায়। এটি ছিলো এই ক্লাবের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ট্রান্সফার ফি। সেই সাথে ডি মারিয়ে হয়ে গেলেন সবচেয়ে দামি ফুটবলার। দলে যোগ দিয়েই তিনি দলের ৭ নাম্বার জার্সিটি গায়ে জড়ান। যেটি ইউনাইটেডের সবচেয়ে মূল্যবান প্লেয়ারদের গায়ে ছিলো। ইউনাইটেডে এসেই প্রথম মাসেই প্লেয়ার অফ দা মান্থ নির্বাচিত হন।
কিন্তু এর পরেই যেন নিজের উপর খেই হারিয়ে ফেললেন। ইনজুরি আর ছন্দহীন ফর্মে তিনি পুরো মৌসুম জুড়ে ২৭ ম্যাচ খেলে গোল করেন মাত্র ৩টি।
কিন্তু তাঁর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছেড়ে দেয়ার কারনটি ছিলো ভিন্ন। মৌসুমের শেষের দিকে তাঁর মেনচেস্টারের বাসায় একটি চুরির ঘটনা ঘটে। যেটি তাকে খুব বাজে ভাবে প্রভাবিত করে। ইউনাইটেড কর্তৃক চব্বিশ ঘন্টা নিরাপত্তা দেওয়া সত্ত্বেও, মারিয়া তার পরিবারকে দূরবর্তী একটি হোটেলে স্থানান্তরিত করেন। পরের ট্রান্সফার উইন্ডোতে তিনি ইউনাইটেড এবং ইংল্যান্ড ত্যাগ করেন।
ইংল্যান্ড ত্যাগ করেই তিনি যোগ দেন আরেক ফরাসি ক্লাব প্যারিস সেইন্ট জার্মানে। ২০১৫-১৬ মৌসুমে পি এস জি তাকে ৪৪ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে ৮ বছরের জন্য তাদের ক্লাবে চুক্তি করায়। প্রথম সিজনেই লীগ ওয়ানে রেকর্ড ভেঙ্গে ফেললেন। এক মৌসুমে ৪৭টি ম্যাচ খেলে সর্বোচ্চ ১৮ টি এসিস্ট করে তিনি লীগের সর্বোচ্চ এসিস্ট দাতা হয়ে যান। সাথে ১৫ টি গোল করেন। এই বছর পি এস জি লীগ ওয়ানের শিরোপা জিতে নেয়। ডিসেম্বর ২০১৫ এর লীগ ওয়ানের প্লেয়ার অফ দ্যা মান্থ নির্বাচিত হন তিনি।
পরের মৌসুমে অর্থাৎ ২০১৬-১৭ তে তিনি মোট ৪৩ টি ম্যাচ খেলে ১৪ টি গোল করেন।
২০১৭-১৮ মৌসুমে তিনি মোট ৪৫ টি ম্যাচ খেলে ২১ টি গোল করে আবারো লীগ ওয়ানের শিরোপা পুনরোদ্ধারে সহায়তা করেন।
তার পরের মৌসুমে করেন ৪৫ ম্যাচে ১৯ গোল। এই সিজনেও পি এস জি লীগ শিরোপা ঘরে তুলে। এই মৌসুমে তিনি লীগ ওয়ানের টীম অফ দ্যা ইয়ারে জায়গা করে নেন।
২০১৯-২০ এ তিনি ৪১ ম্যাচে ১৩ টি গোল করেন। এই বছর পি এস জি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লীগে রানার্স-আপ হয়। এবারও তিনি লীগ ওয়ানের শিরোপা ঘরে তোলেন।
গত বছর অর্থাৎ ২০২০-২১ সিজনটি খুব একটি ভালো যায়নি ফাবিয়ান মারিয়ার জন্য। তিনি ৪৫ ম্যাচে করেন ৫টি গোল। এখন পর্যন্ত তিনি পি এস জি তে ২৬৪ ম্যাচে ৮৭ টি গোল করেছেন।
ফাবিয়ান মারিয়ার জাতীয় দলের ক্যারিয়ার
২০০৭ সালে, আর্জেন্টিনার অনূর্ধ্ব ২০ দলে জায়গা পান মারিয়া। আর তারপর থেকেই শুরু হয় ফাবিয়ান মারিয়ার জাতীয় দলের ক্যারিয়ার। ২০০৭ দক্ষিণ আমেরিকান যুব চ্যাম্পিয়নশীপে তিনি অংশগ্রহণ করেন। ২০০৭ ফিফা অনূর্ধ্ব ২০ বিশ্বকাপেও তিনি আর্জেন্টিনা দলে জায়গা পান। প্রতিযোগিতায় তিনি তিনটি গোল করেন এবং আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন হয়।
২০০৮ সালের ২৮ জানুয়ারি, ফাবিয়ান মারিয়া এবং তাঁর কয়েকজন অনূর্ধ্ব ২০ সতীর্থ বেইজিং অলিম্পিকের দলে ডাক পান। কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে খেলার অতিরিক্ত সময়ে ১০৫তম মিনিটে লিওনেল মেসির পাস থেকে আর্জেন্টিনার হয়ে জয়সূচক গোল করেন তিনি। খেলায় আর্জেন্টিনা ২–১ ব্যবধানে জয় লাভ করে। ২৩ আগস্ট, প্রতিযোগিতার ফাইনালে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে খেলার একমাত্র গোলটি করেন মারিয়া এবং টানা দ্বিতীয়বারের মত ফুটবলে অলিম্পিক স্বর্ণপদক জেতে আর্জেন্টিনা।
এই সাফল্যের কারণে তাঁর ডাক আসে আর্জেন্টিনা সিনিয়র দলে। ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ এ প্যারাগুয়ের সাথে একটি প্রীতি ম্যাচে তাঁর জাতীয় দলে অভিষেক হয়।
২০১০ ফিফা বিশ্বকাপের ২৩ সদস্যের স্কোয়াডে জায়গা পান তিনি। ২০১০ সালের ১১ আগস্ট, মারিয়া তার ক্যারিয়ারে প্রথম আন্তর্জাতিক গোল করেন।
২০১৪ সালের বিশ্বকাপের কোয়ালিফায়ের ১২ ম্যাচে মাঠে নামেন তিনি। তারপর ডাক চলে আসে বিশ্বকাপের স্কোয়াডে। রাউন্ড অফ সিক্সটিনে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ১১৮ মিনিটের মাথায় একমাত্র গোলটি করেন। কোয়াটার ফাইনালে বেলজিয়ামের বিপক্ষে একমাত্র গোলের এসিস্ট করেন তিনি।
আর এই ম্যাচে ইনজুরির কবলে পরে যান। শেষ হয়ে যায় তাঁর সেই বিশ্বকাপের আসর। তারপর ফাইনালে আর্জেন্টিনা ১-০ গোলে জার্মানির কাছে হেরে রানার্স-আপ হয়। এই আসরে মারিয়া বেষ্ট প্লেয়ার এও্যার্ডের জন্য মনোনীত হন এবং ফিফার ড্রীম ইলেভেনে জায়গা করে নেন। ২০১৫ সালের কোপা আমেরিকায় দুটি গোল করেন। আর্জেন্টিনা এ আসরে রানার্স-আপ হয়।
আবারো তিনি ডাক পান ২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপে। সেমি-ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে দূর থেকে এক দুর্দান্ত গোল করেন। যদিও এই ম্যাচ আর্জেন্টিনা ৪-৩ এ পরিজিত হয়ে সেমিফাইলে বিশ্বকাপ মিশন শেষ করে।
সর্বশেষ এই বছর ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত কোপা আমেরিকায় দাপট দেখালেও ইঞ্জুরির কারনে পুরো ম্যাচে মাঠে থাকা হয়নি তার। কিন্তু ফাইনাল ম্যাচে তাঁর একমাত্র গোলে ব্রাজিলকে হারিয়ে কোপা অ্যামেরিকা ২০২১ এর চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা।
আর্জেন্টিনায় তাঁর এমন পার্ফমেন্সে তিনি কনমেবল টীম অফ দ্যা ডিকেড এ জায়গা করে নেন।
বৈবাহিক জীবন
২০১১ সালের জুলাইয়ের শেষ দিকে তিনি হোর্হেলিনা কার্দোসোকে বিয়ে করেন। হোর্হেলিনা থাকেন আর্জেন্টিনার রোজারিওতে। তাদের ঘরে দুই জন কন্যা সন্তান রয়েছে।
এই ছিলো আর্জেন্টাইন ফুটবলার ডি মারিয়ার জীবনী। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন ইচ্ছা থাকলে নিজের স্বপ্নটাকে পূরণ করা সম্ভব। আর এজন্য প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম করা আর চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।
Leave a Reply