মৃত্যুর পরও কেন আপনার মস্তিষ্ক সচল থাকে, আপনি জানেন কি ?

Published:

Updated:

মৃত্যুর কারণ

Disclaimer

As an affiliate, we may earn a commission from qualifying purchases. We get commissions for purchases made through links on this website from Amazon and other third parties.

আপনি কি জানেন? মৃত্যুর পর মানুষের মস্তিষ্ক ১০ মিনিটের ও বেশি সময় ধরে সচল থাকে।

মৃত্যু সম্পর্কে আমাদের ধারণা তেমন জটিল নয়। কোনো মানুষের হৃদযন্ত্র কাজ করা বন্ধ করে দিলে, আমরা তাকে মৃত বলে মেনে নেই। কারণ তখন শ্বসনতন্ত্র এবং সংবহন তন্ত্র আর কাজ করে না।

শরীরও সম্পূর্ণরূপে কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এবং আস্তে আস্তে জীবন শেষ হয়ে যায়। কিন্তু আসলেই কি তাই? না, এখানেই শেষ নয়।

হৃদযন্ত্র কাজ করা বন্ধ করলেও, মস্তিষ্ক তখনো সচল থাকে। শরীরের অংশগুলোর মধ্যে মস্তিষ্কই সবশেষে কাজ করা বন্ধ করে।

মৃত্যুর আগ মুহূর্তে কি হয় 

মৃত্যুর কিছু মুহুর্ত আগে, মস্তিষ্কে বৈদ্যুতিক তরঙ্গ প্রেরিত হয়। কেউ জানে না এটি কেন ঘটে! একসময় মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়।

শ্বাস-প্রশ্বাস এবং হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে গেলেও, মানুষের ২-২০ সেকেণ্ডের মত জ্ঞান তখনো থাকে। এমনটা হওয়ার কারণ হল সেরেব্রাল কর্টেক্স। সেরেব্রাল কর্টেক্স অক্সিজেন ছাড়াও কাজ করতে পারে।

মস্তিষ্কের এই অংশটি চিন্তা ভাবনা এবং কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। এটি আমাদের স্নায়ু থেকে তথ্য নিয়ে কাজ করার নির্দেশ পাঠায়।  সেরেব্রাল কর্টেক্স কাজ করা সত্ত্বেও, মৃত্যুর পূর্বে শরীর আত্মবাচক এবং পেশীসংক্রান্ত ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।

আস্তে আস্তে মস্তিষ্কের কাজ করার ক্ষমতা হ্রাস পায়। মস্তিষ্কের কোষগুলো রাসায়নিক কিছু কাজ করা শুরু করে যা তাদের মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়।

মৃত্যুর কারণ

অক্সিজেন এবং আমাদের মৃত্যু 

অক্সিজেন মানুষের বেঁচে থাকা এবং মৃত্যুর মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে। যদি কেউ সিপিআর বা লাইফ সাপোর্টের মাধ্যমে হৃদযন্ত্র কে আবার সচল করে তুলতে পারে, তাহলে মস্তিষ্ক আবার সচল হওয়ার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ অক্সিজেন পায়।

কিন্তু কোনো অক্সিজেন না পেলে, মস্তিষ্ক ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। মস্তিষ্কের অধিকাংশ অংশ কাজ করা বন্ধ করলেও, একটি অংশ তখন ও সচল থাকে। যা এত সহজে হার মেনে নেয় না।

এটি হল স্মৃতিকেন্দ্র। স্মৃতিকেন্দ্র  আমাদের সবচেয়ে আবেগপূর্ণ স্মৃতিগুলো ধরে রাখে। মস্তিষ্কের এই অংশটি রক্ত ক্ষরণে সক্ষম নয়, এমনকি গুরুতর আঘাতের ক্ষেত্রেও নয়। এবং এটি ই মস্তিষ্কের অন্য অংশগুলোর মধ্যে সবশেষে কাজ করা বন্ধ করে।

কিন্তু তার আগে, স্মৃতিকেন্দ্র আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতিগুলো আমাদের চোখের সামনে তুলে ধরে।

যখন ডাক্তার লাইফ সাপোর্ট সরিয়ে নেয়, তখন রোগী কে ক্লিনিকালি মৃত ঘোষণা করা হয়। কিন্তু মস্তিষ্ক মৃত্যুর পর ও ১০ মিনিটেরও বেশি সময় পর্যন্ত সচল থাকে।

প্রত্যেক মৃত ব্যক্তির ইলেক্ট্রো এনসেফালোগ্রাফিক বা ইইজি রেকর্ড চেক করলে দেখা যায়, প্রত্যেকের রেকর্ড ই আলাদা। এর অর্থ প্রত্যেকেই মৃত্যুর সময় ভিন্ন রকম অভিজ্ঞতা লাভ করে

মৃত্যুর কারণ

মৃত্যুর পর পর্যন্ত কোষ সচল থাকে  

মৃত্যুর দুইদিন পর, শরীরের ১০০০ এরও বেশি জিন তখনো কাজ করতে থাকে।

এদের মাঝে কিছু জিন খুব জোরালোভাবে কাজ করে থাকে এবং এগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ যেমন, প্রদাহ উদ্দীপনা, রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থাপনায় ইন্ধন জোগানো এবং পাল্টা দুশ্চিন্তা ইত্যাদি কাজ করতে থাকে। কিন্তু কিছু কিছু জিন কেবল ভ্রূণাবস্থায় কাজ করে।

এটি কি সম্ভব যে, কোষীয় অবস্থায় প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে শরীর মৃত্যু থেকে বাঁচার চেষ্টা করে?

আবার দেখা যায়, কিছু জিন ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধি করতে থাকে। কিন্তু মৃত্যুর ২ দিন পর কেন শরীরে ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধি পেতে শুরু করে?

একটি মৃত শরীরে ক্যান্সার বৃদ্ধি পাওয়ার কি কারণ হতে পারে? এটা খুবই রহস্যাজনক।

হতেই পারে, মৃত্যু সম্পর্কে আমাদের ধারণা ভুল। তাহলে যেখানে শরীরের কিছু অংশ তখনো কাজ করছে, সেখানে মানুষকে মৃত ঘোষণা করা কি ঠিক?

আবার মৃত্যুর পর অনেকের শরীরের কোনো অঙ্গ দান করে দেওয়া হয়, তাদের ক্ষেত্রে এর অর্থ কি? মৃত ব্যক্তির ময়না তদন্ত করার সময় কি তাহলে আরো সতর্ক হওয়া উচিত?

কেবল  অধিক সময় এবং গবেষণাই পারে এসবের রহস্য ভেদ করতে।

About the author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Latest Posts

  • সর্দি থেকে মুক্তির উপায়, নাকের এলার্জি দূর করার উপায় | দ্রুত উপশম পেতে ঘরোয়া চিকিৎসা

    সর্দি থেকে মুক্তির উপায়, নাকের এলার্জি দূর করার উপায় | দ্রুত উপশম পেতে ঘরোয়া চিকিৎসা

    নাকের এলার্জি হচ্ছে নাকের ঝিল্লি প্রদাহের কারণে নাকের একটি সমস্যা। এটি সারা বিশ্বব্যাপী একটি স্বাস্থ্য সমস্যা। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ নাকের এই রোগে আক্রান্ত। নাকের এলার্জি কোন মারাত্মক ক্ষতিকর রোগ না হলেও এ রোগের কারণে দৈনন্দিন জীবন প্রবাহ ব্যাহত হয়। এলার্জিজনিত সর্দি এবং হাঁচি জীবনকে অতিষ্ট করে তোলে। এই রোগে হঠাৎ…

    Read more

  • কফ, কাশি দূর করার উপায় | সঠিক চিকিৎসাই হতে পারে কাশি দূরীকরণের মাধ্যম

    কফ, কাশি দূর করার উপায় | সঠিক চিকিৎসাই হতে পারে কাশি দূরীকরণের মাধ্যম

    গলায় বুকে কফ জমে থাকা বেশ বিরক্তিকর একটি সমস্যা। ঋতু পরিবর্তনের ফলে আবহাওয়া পরিবর্তন হয়। আর আবহাওয়ার এই দ্রুত পরিবর্তন আমাদের শরীর খাপ খাওয়াতে পারে না, যার কারণে সৃষ্টি হয় ঠান্ডা জ্বর ও সর্দি-কাশির। ঠান্ডা সর্দি কাশি এগুলো আমাদের কাছে খুব পরিচিত রোগ হলেও এই ঠান্ডা সর্দি কাশি থেকে আমাদের দেহে অনেক বড় বড় অসুখ…

    Read more

  • ওজন কমানোর উপায় ডায়েট চার্ট | সুস্থ স্বাভাবিক জীবন

    ওজন কমানোর উপায় ডায়েট চার্ট | সুস্থ স্বাভাবিক জীবন

    সুস্থ স্বাভাবিক এবং রোগমুক্ত জীবন আমরা কে না চাই। আর এই সুস্থ সুন্দর জীবন যাপন করার একমাত্র উপায় হচ্ছে শারীরিক ওজন ঠিক রাখা। কেননা ওজন বেড়ে গেলে যে কোন রোগের ঝুঁকি ও বেড়ে যায়। এজন্য বাড়তি ওজন অনেকের মানসিক অসুস্থির প্রধান কারণ। তাই রোগ প্রকোপ কমাতে এবং মানসিক শান্তির উদ্দেশ্যে আমাদের সকলের উচিত শারীরিক ওজন…

    Read more