শুধু ভারতে নয় বাংলাদেশেও সমান জনপ্রিয় অভিনেতাদের মধ্যে অক্ষয় কুমার অন্যতম। তাঁর অভিনয় প্রতিভা মুগ্ধ করে আমাদের।
অভিনেতা অক্ষয় কুমার বলিউডের একজন সফল অভিনয় শিল্পী। তাঁর অভিনয় প্রতিভা দিয়ে আমাদের তিনি মুগ্ধ করেছেন। বলিউডের কিং খান আর বাদশাদের ভিড়ে তিনি শুধু নিজের জায়গা পোক্তই করেননি, হয়েছেন হাজারো তরুণ তরুণীর অনুপ্রেরণা।
আজকের এই অবস্থানে আসতে অক্ষয় কুমারকে করতে হয়েছে অনেক সংগ্রাম। সামলাতে হয়েছে নানান প্রতিকূলতা, হতাশায় আচ্ছন্ন হয়েছেন বারবার, ভেবেছেন তাঁর দ্বারা হবে না, হয়তো তিনি হেরেই গেলেন কিন্তু তিনি আশা ছাড়েননি, সংগ্রাম করে গেছেন যতক্ষণ না সফল হয়েছেন।
এবং আজ তিনি সফল শক্তিশালী একজন অভিনেতা।
সব্যসাচী অভিনেতা অক্ষয় কুমার
পাঞ্জাবের অমৃতসরে ১৯৬৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর জন্ম নেন এই অভিনেতা। রাজিব হরি ওম ভাটিয়া ছিলো তাঁর মূল নাম। তিনি ভালো নাচতে পারতেন। অভিনয় জীবন শুরু করার আগে নাচিয়ে হিসেবে বেশ সুনাম অর্জন করেন তিনি।
জীবন সংগ্রামে টিকে থাকার জন্য তিনি ওয়েটারের কাজ করেছেন। জীবিকার তাগিদে বাংলাদেশেও কাজ করেছেন কিছুদিন। তাঁর সংগ্রামের পথচলা তরূণ সমাজের জন্য এক অনুপ্রেরণামূলক গল্পের নজির হয়ে আছে।
সফলতায় অক্ষয় কুমার
নানান উন্থান পতন পেরিয়ে আজকে তিনি একজন আইকনে পরিণত হয়েছেন। কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে আজকের অক্ষয় কুমার যে রুটিন মেনে চলতেন এবং জীবন সম্পর্কে যে দর্শনে তিনি বিশ্বাস করেন, চলুন সে সম্পর্কে জেনে আসি তাঁর নিজের মুখ থেকে।
“আমার ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে সবাই বলতো, ও তো শুধু একশনই জানে।
আমি সবসময় মনে করি, প্রত্যেকের জীবনে পরিবর্তনটা সবচেয়ে জরুরী বিষয়। সবাই সবসময় আমার দিকে একটি ইমেজে ফোকাস করার চেষ্টা করত, কিন্তু আমি তা রেখে অন্য অনেকগুলো ইমেজে জাম্প করতাম।
সত্যি বলতে, আমি নিজের মতো হয়েছি। নিজের মতো হওয়াটাই সবচেয়ে অসাধারণ ব্যাপার। সবাই যেদিকে ছুটছে- সেদিকে নয়, নিজের পথটা নিজেই তৈরি করো।
কেউ যদি তোমার সাথে না থাকে- ব্যাপার না, একলা চলো। নিজে যা চাও তাই তোমার মতো করে করো। কিছু না কিছু সত্যি দাঁড়িয়ে যাবে।
আমার জন্য, আমার ক্যারিয়ার শুধু একটা ক্যারিয়ারই নয়। এটা ছিল আমার লক্ষ্য, আমার ভালোবাসা।
যেদিন কেউ নিজের প্যাশনের পেছনে ছুটবে- কেউ তাকে সফল হওয়া থেকে থামাতে পারবে না। বিশ্বাস করো, সত্যি!
অক্ষয় কুমারের সফলতা’র মূলমন্ত্র
আমি সকালে ঘুম থেকে উঠার অপেক্ষায় থাকি এবং কাজ শুরু করে দেই। শৈশব থেকে আজ পর্যন্ত এমন একটি দিন নেই যে আমি সূর্য উঠা দেখিনি।
আমার দৈনিক রুটিন শুরু হয়, ভোর ৪টা বাজে। সারাদিনে একমাত্র ভোর ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত আমি একা থাকি। এবং এটাই আমার সেরা সময় যখন আমি ভাবি- আমার কি করতে হবে।
প্রত্যেকের প্রতিদিন অনন্ত একটি ঘণ্টা চিন্তা বা ধ্যনের জন্য রাখা উচিত। তারপর ভোর ৫টা থেকে ৫.১৫, আমি দৈনন্দিন কাজ শুরু করি, সাঁতার কাটি। নিজেকে তৈরি করতে আমার ২ ঘন্টা সময় লাগে।
সফলতার গোপন রহস্য
প্রতিদিন ৮ ঘন্টা কাজ করি। ৮ ঘন্টা অনেক। কিন্তু ৮ ঘন্টা আমি সেটেই থাকি, সেট থেকে যাই না। আমি এক মুহূর্তের জন্য গিয়ে আমার ভ্যানিটি ভ্যানে গিয়ে বসি না। প্রতিদিন রাত ৯টা থেকে ৯.৩০ এর মধ্যে আমি ঘুমিয়ে পড়ি।
নিজের শরীর চর্চার জন্য ১টা ঘন্টা সময় আপনার হাতে নেই?
রাত ৬.৩০ এর পর খাবার খাওয়ার দরকার নেই। এতো খাবার আপনার শরীর হজম করতে পারে না। এই টিপসগুলো মেনে চলে দেখুন, কীভাবে আপনার শরীর ফিট থাকে।
আমাদের দেশে, আমি লক্ষ্য করেছি, প্রচুর মানুষের স্বাস্থ্যের উপর নিয়ন্ত্রণ নেই।
এটা খুব সাধারণ একটা ব্যাপার। সবকিছুই আপনার হাতে আছে। আপনার স্বাস্থ্য আপনার হাতে। আপনার জীবন আপনার হাতে। সবচেয়ে সাধারণ বিষয় এটাই। কিন্তু আমরা একে জটিল করে ফেলি।”
কিভাবে এলেন অভিনয় জগতে?
বয়স পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই; তবুও যাকে ভারতের সবচেয়ে ‘ফিট’ নায়ক বলা হয়, তিনি হলেন সকলের প্রিয় অক্ষয় কুমার। অভিনয় জগতে অভিনেতা হিসেবে পেয়েছেন অনেক পুরষ্কার, সম্মাননা। বলছিলাম, অক্ষয়ের অভিনয় জগতে পা রাখার গল্প,
পড়াশুনার পাশাপাশি তিনি প্রথমে ভলিবল, ফুটবল, ক্রিকেট, হকি খেলেছেন। একটি মেয়েকে ভালোবেসে তার নজর কাড়তে মার্শাল আর্ট শিখেছেন, একসময় প্রয়োজনের তাগিদে রান্নাও শিখেছেন। তিনি কিছুদিন কলকাতায় ট্রাভেল এজেন্সিতে কাজ করেছেন, ঢাকায় হোটেলে সেফের কাজ করেছেন, গহনার ব্যবসাও করেছেন। ছোট ছোট বাচ্চাদের মার্শাল আর্ট শিখিয়েছেন অক্ষয়ের বেশ ভালোই চলছিল। তবে এখান থেকেই তারঁ অভিনয়ের যাত্রার শুরু।
এক ছাত্রের বাবা তাঁকে সুদর্শন বলে মোডেলিংয়ের কাজে নিয়ে গেলেন। তার কিছুদিন পরে তিনটি ছবিতে অভিনয় করতে চুক্তিবদ্ধ হন অক্ষয়। এভাবেই শুরু হয় তাঁর অভিনয়ের পথ চলা।
আমরা সবাই জীবনে সফল হতে চাই কিন্তু সফল হওয়ার জন্য পরিশ্রম করতে চাই না। অথচ লক্ষ্য যদি ঠিক থাকে আর কাজের মধ্যে প্যাশন থাকে তাহলে আপনাকে কেউ থামাতে পারবে না।
অক্ষয় কুমার আমাদের অনুপ্রেরণা। তিনি জীবন নিয়ে যে দর্শন ধারণ করেন আর যে রুটিন ফলো করেন আমাদেরও উচিত সেরকম কিছু করা কিংবা নিজের মতো করে নিজের জীবনের ছকটাকে সাজিয়ে নেওয়া।
Leave a Reply