একটি অত্যন্ত গরীব পরিবারে তার জন্ম। ভোর না হতেই দৈনিক সংবাদপত্র নিয়ে ছুটতেন এ পাড়া থেকে ওপাড়ায়। কিন্তু শৈশব থেকেই ছবি আকার প্রতি তার একটা ভিন্ন নেশা ছিল। স্কুলের ফলাফল বরাবরি খুব খারাপ ছিল তার।
বড় হতে হতে একসময় একজন বড় চিত্রশিল্প হওয়ার বাসনা তৈরি হয় মনে। ছোট স্বপ্ন ডানা মেলে এক পর্যায়ে উড়তে থাকে আকাশে। ঘরের পেছনের একটি স্থানে দিনরাত কাজ করতেন তিনি।
এটাই ছিল তার কার্টুন অ্যানিমেশনের স্টুডিও। তিনি একরোখা, দুরন্ত। তাই যা মাথায় আসে পূর্বাপর না ভেবে তাই করে বসেন। আর এভাবেই রাতারাতি তিনি নিজের কোম্পানি তৈরি করে ফেলেন।
ওয়াল্ট ডিজনির সংগ্রাম
কিন্তু তার প্রথম কার্টুন সিরিজের চূড়ান্ত ব্যর্থতার পর, সেই কোম্পানিটি দেউলিয়া হয়ে যায়। অর্থনৈতিক অবস্থা তখন মারাত্মক শোচনীয়। এমন কি খাওয়া পড়ার টাকা তার কাছে নেই।
একদিন একটি সুটকেস ও নগদ ২০ ডলার টাকা সাথে নিয়ে ওয়াল্ট নতুন করে সবকিছু শুরু করার স্বপ্ন নিয়ে হলিউডে যাত্রা করেন।
বিখ্যাত কার্টুন ক্যারেক্টার মিকি মাউস সৃষ্টি
এবার একটি পুরনো গ্যারেজে সে তার নতুন স্টুডিও তৈরি করেন। তার জীবন পরিবর্তন করতে পারে এমন একটি নতুন আইডিয়া নিয়ে নতুন উদ্যমে কাজ করার চেষ্টা করতে থাকেন। আর হলোও তাই, এটাই সেই বিখ্যাত কার্টুন ক্যারেক্টার মিকি মাউস।
কিন্তু পরিবেশকরা তার এই আইডিয়াকে বারবার খুব বাজেভাবে প্রত্যাখান করতে থাকেন। তারা বলে, একটা ইদুর মানুষের মতো কথা বলবে এমন আজগুবি জিনিস কে পছন্দ করবে বলেন?
কিন্তু নিজের আইডিয়ার উপর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল তার, আর কিছু না ভেবে নিজেই উদ্যোগী হয়ে পরপর দুটি কার্টুন ফিল্ম বানিয়ে ফেললেন। এমনকি তখনো থিয়েটারের মালিকরা এই ফিল্ম প্রদর্শনীতে অনাগ্রহ প্রকাশ করলেন।
ওয়াল্ট ডিজনির ভেঙ্গে পড়া
ডিজনি বছরের পর বছর ঋণের বোঝা টেনে নিয়ে সংগ্রাম করছিলেন তখন। প্রচণ্ড দুশ্চিন্তায় ছিলেন, কীভাবে, কোথা থেকে তার এই প্রজেক্টের এতোগুলো টাকা উঠিয়ে নিয়ে আসবেন?
অবশেষে মিকি মাউসের প্রদর্শনী হয়। অস্বাভাবিক, অপ্রত্যাশিত দর্শক প্রতিক্রিয়ার তৈরি হয় এই ফিল্ম নিয়ে। মিকি মাউস- যা পরবর্তীতে পৃথিবীর ইতিহাসে সফলতার অন্যতম নিদর্শন হিসেবে জায়গা করে নেয়।
২২ টা পুরস্কার জয় করে তার এই ফিল্ম, আর ওয়াল্ট ডিজনি বিনোদন জগতের অন্যতম এক নাম হয়ে উঠেন।
ডিজনির এই গল্প থেকে কি শিখলেন? কমেন্ট করে আপনার উত্তরটি লিখুন।
একটি কথা মনে রাখবেন, “প্রতিটি ব্যর্থতাই একেকধাপ সফলতার দিকে আপনাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তাই কখনো চেষ্টা থামাবেন না।”
Leave a Reply