জীবনে সফলতা পেতে হলে না বলুন ৮টি বদ অভ্যাসকে

জীবনে সফলতা পেতে হলে
  • আপনি কি জীবনে সাফল্য পেতে চান? জীবনে সফলতা পেতে হলে কি করতে হবে জানা আছে আপনার? 

কখনো কি ভেবে দেখেছেন মিলিওনিয়াররা কোন জাদুর ছোঁয়ায় এতো সম্পদ ও সাফল্যের দেখা পেয়েছেন? ইচ্ছে হয় না, সেই জাদুর কাঠিটা নিজেও ছুঁয়ে দেখতে? জাদুর পরশে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে?

আমরা জাদুর কাঠি খুঁজি, কারণ জাদুর কাঠি হচ্ছে সবচেয়ে সহজ এবং শর্টকার্ট মাধ্যম ।

কিন্তু হতাশার ব্যাপার হচ্ছে- সফল হওয়ার জন্য আপনি আমি যে জাদুর খোঁজ করছি, আসলে ব্যাপারটা কোন জাদুর ছোঁয়া নয়, বরং সফল ব্যক্তিরা এমন কিছু ভাল অভ্যাস তৈরি করতে পেরেছিলেন, যা তাদেরকে অন্য আট দশজন মানুষের চেয়ে বেশি কর্মদক্ষ করে তুলেছে । তারা হয়েছেন লক্ষ্যের প্রতি আরও অবিচল ।

তাহলে সেই অভ্যাসগুলো কি ?

আপনার নিত্যদিনের এমন কিছু বাজে অভ্যাস আছে, যেগুলো আপনাকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার বিপরীতে প্রতিদিন পিছিয়ে দিচ্ছে ।

যদি আপনার লক্ষ্য থাকে বিশ্বসেরা মানুষদের মতোই সফল হওয়া, নিজের স্বপ্নকে ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছা, তাহলে প্রস্তুতি পর্ব হিসেবে প্রথমেই আপনাকে এই বদ অভ্যাসগুলো বাদ দিতে হবে ।

জেনে নেওয়া যাক কোন কোন অভ্যাসগুলো এই মুহূর্তে আমাদের ছাড়া উচিতঃ

 জীবনে সফলতা পেতে হলে

১. ঘুমাতে গিয়ে ফোন ব্যবহার করা

এই বাজে অভ্যাসটি আপনার কর্মদক্ষতাকে যে কতটা কমিয়ে দিচ্ছি, আপনি ভাবতেও পারবেন না। অন্ধকারে এসব মোবাইল ফোনের তীক্ষ্ণ আলো ঘুমের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, যার ফলে তৈরি হয় অস্থিরতা। ঘুমাতে যাবার সময় স্বাভাবিকভাবেই আপনি ক্লান্ত থাকেন।

এসময় মুঠোফোনের আলো আপনার চোখের সমস্যা করে। আপনি নিজেও জানেন না, ঘুমাতে গিয়ে ঘুমের জন্য জরুরী মূল্যবান সময়টা কীভাবে আপনি মোবাইল ফোনের পেছনে নষ্ট করছেন। রাতে কম ঘুমানোর প্রভাব আপনার সারাদিনের কর্মদক্ষতাকে কমিয়ে দেয়। কাজে অমনোযোগী করে তোলে।

জীবনে সফলতা পেতে হলে বদ অভ্যাসকে না বলতে হবে। 

২. কঠিন কাজ বাকি রাখা

কঠিন কাজটি আগেই সেরে ফেলা উচিত। কারণ, কাজটি কঠিন হলে তার জন্য একটা মানসিক চাপ সব সময় আপনার মাথায় কাজ করবে। যার প্রভাব পড়বে আপনার অন্য কাজগুলোতে। এর চাপে স্বাভাবিকভাবে অন্য কাজের মনোযোগ হারিয়ে যাবে।

তাই দিনের শুরুতে জটিল কাজটি প্রথমেই করে ফেললে চাপমুক্তভাবে বাকি কাজগুলো শেষ করতে পারবেন । কারণ, বড় ও জটিল কাজ শেষে আপনি থাকবেন ফুরফুরে মেজাজে। আনন্দ নিয়ে পরবর্তী কাজ করতে পারবেন। ফলে অন্য কাজ আপনার জন্য সহজ হয়ে যাবে। 

একবার উকি দিয়ে দেখি ফেসবুকে আবার চলে যাই ইউটিউবে। এতে পাঁচ মিনিটের কাজ করতে নিজের অজান্তেই সময় লেগে যায় পনেরো বিশ মিনিট।

৩. একই সঙ্গে একাধিক কাজ

কাজের প্রতি অনীহা বা ভয় ধরার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে একই সাথে একাধিক কাজ নিয়ে পড়ে থাকা। একসাথে অনেকগুলো কাজ করতে গেলে ভেতরে ভেতরে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি, এর ফলে নিজের অজান্তেই অলসতা, কাজে অমনোযোগিতা চলে আসে।

অনেকগুলো কাজ একসাথে করতে গিয়ে মন বিভক্ত হয়ে যায় একাধিক জায়গায়। এক্ষেত্রে সবথেকে ভাল উপায় হচ্ছে, সবগুলা কাজকে প্রথমে একসাথে লিখে রাখা, তারপর তালিকা ধরে একটি একটি করে সবগুলো শেষ করা।

এতে আপনার সময় ও শ্রম দুটিই কম লাগবে । আপনি হয়ে উঠবেন কাজের প্রতি সিরিয়াস, বেড়ে যাবে আপনার কর্মদক্ষতা । যা আপনার কাজকে সঠিকভাবে শেষ করতে সাহায্য করবে ।

জীবনে সফলতা পেতে হলে

৪. প্রতিনিয়ত অ্যালার্ম স্কুজ করা

আমাদের মস্তিষ্ক হচ্ছে বিরাট রহস্যময়। এটি একটি নির্দিষ্ট নিয়মে চলে। প্রতিদিন একই সময়ে ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস আমাদের মস্তিষ্ককে সতর্ক করে দেয়। তাই ঘুম থেকে জাগার সময় হলে, ঠিক কাছাকাছি সময়ে আমরা জেগে যাই।

আপনি যদি বারবার স্কুজ বোতাম চেপে এই নিয়ম ভাঙ্গেন, তাহলে আপনার মস্তিস্কের স্বাভাবিক প্যাটার্নে বিভ্রাট ঘটে। এর ফলে পরবর্তীতে ঘুম থেকে উঠাটাই কঠিন কাজে পরিনত হয়ে যাবে আপনার জন্য।

হুমায়ূন আহমেদ কতটা সীমাবদ্ধ ছিলেন? পড়তে ক্লিক করুন

৫. দ্রুত ইমেল দেওয়া

প্রতিদিন কাজের ক্ষেত্রে শত শত ইমেল জমা হচ্ছে আপনার ইমেইলের ইনবক্সে । প্রতিটি ইমেলের উত্তর দিতে গিয়ে প্রচুর গুরুত্বপূর্ণ সময় নষ্ট হচ্ছে আপনার। তাই এক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ হচ্ছে- অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রেরক নির্বাচন করা।

শুধুমাত্র কাজের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ মেইলগুলোর উত্তর দিন । বাকিদের জন্য ইমেইলে অটোরেসপনডার অপশন চালু করে রাখতে পারেন ।

সেখানে লিখে দিন- পরবর্তীতে আপনি তাদের সাথে যোগাযোগ করছেন। এই পদ্ধতি প্রয়োগে আপনার প্রচুর সময় ও শ্রম বেঁচে যাবে । বেঁচে যাওয়া সময়টুকু আপনার কাজে ব্যবহার করুন । ইমেইলের উত্তর দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সময় বেঁছে নিন।

৬. মিটিং

একটি কথা প্রচলিত আছে- খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি । হ্যাঁ, এই কথাটা আমাদের কাজের ক্ষেত্রেও সত্যি । আমরা মিটিং করে প্রচুর সময় নষ্ট করে চলি প্রতিদিন । অথচ অপ্রয়োজনীয় মিটিংয়ের পেছনে যে সময়টা নষ্ট করছি, সেটা কাজে লাগালে আরও ফলপ্রসূ কিছু পাওয়া সম্ভব ।

আপনার কর্মদক্ষতা বাড়াতে মিটিং যত এড়িয়ে যাবেন, ততই ভাল। তবে অবশ্যই প্রয়োজনীয় মিটিংয়ে অংশ নিন । আর বাদ বাকি সময়টা দিন আপনার কাজের পেছনে।

জীবনে সফলতা পেতে হলে

৭. নির্ভুল হওয়ার চেষ্টা

আপনি যেটাই করেন না কেন, একটা ব্যাপার মাথায় রাখতে হবে- শতভাগ নির্ভুল শুধু খাতা কলমেই সম্ভব, বাস্তবে নয় । তাই কোন কাজকে একেবারে নির্ভুলভাবে করতে এর পেছনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় ব্যয় করার চেয়ে, কাজটি মোটামুটি শেষ করে অন্য কাজ করুন।

আপনাকে নিজেকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া জানতে হবে, কখন আপনি কাজটিকে থামিয়ে দেবেন। আপনাকে জানতে হবে, কখন একটি কাজ থেকে বের হয়ে অন্য কাজে যাওয়ার সময়। কেননা, নির্ভুলভাবে একটি কাজ করতে গিয়ে আপনি আপনার সময় ও শক্তি দুইটির অপচয় করছেন।

আর এটা একটা ঘোরের মতো, যা লক্ষ্য পূরণের পথে আপনার জন্য একটি বিরাট বাঁধা। 

  একজন কৃষকের দার্শনিক হয়ে উঠার অবিশ্বাস্য গল্প | পড়তে ক্লিক করুন

৮. কাজের সময় ইন্টারনেট ব্রাউজিং

কম্পিউটারে কাজ করতে গেলে আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি সময় লাগিয়ে দেই কাজে। কারণ, কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে আমরা কাজের চেয়ে বেশি মনোযোগী থাকি অনলাইনে, বিশেষ করে- ফেসবুক, ইউটিউবে।

একটু কাজ করি, একবার উকি দিয়ে দেখি ফেসবুকে আবার চলে যাই ইউটিউবে। এতে পাঁচ মিনিটের কাজ করতে নিজের অজান্তেই সময় লেগে যায় পনেরো বিশ মিনিট।

তাই, কাজের সময় অবশ্যই ইন্টারনেট ব্রাউজিং থেকে বিরত থাকুন। বরং ঝটপট কাজ সেরে ফেলে তারপর নাহয় সোশ্যাল মিডিয়াতে সময় দিন।

Share this

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top