অভিযাত্রী সাহিত্য পাতায় কবি তমিজ উদ্দীন লোদীর কবিতা
যে ঝড়
যে ঝড় তুলে তুমি যাচ্ছিলে তার গতি অকস্মাৎ রুদ্ধ হয়ে গেছে
গাড়লেরা নেমেছে রাস্তায়
তারা এখন লোফালুফি খেলে।
তারা এখন করাতকলের মতো
চিরে যাচ্ছে মূল্যবোধ নামের তরু
তারা ডেকে আনছে ঈশানের মেঘ চাঁদকে আড়াল করবে বলে
ছড়িয়ে দিচ্ছে গুঁড়ো গুঁড়ো বিষ, সায়ানাইড তরল
তারা নেমে যাচ্ছে যতখানি নেমে যেতে হয়।
উত্থান নয় বরং
তারা জানে পতনের চেয়ে উৎকৃষ্ট আর কিছু নয়।
সংহারের বদলে
বৃক্ষতলে যারা জড়ো হয়েছিল তারা কুঠারের বদলে জল নিয়ে এসেছিল
আশেপাশের চারাগাছগুলি তখন প্রাণভরে আকাশ দেখছিল
সংহারের বদলে
তারা বসেছিল নিবিড় ছায়াতলে
পরিযায়ীর পাখসাট দেখবে বলে
বীজ এসেছিল ঠোঁটে ঠোঁটে
পরাগায়ন ছিল হাওয়ার হিল্লোলে
কে জেনেছিল এই জন্মকথা, বৃক্ষের ইতিহাস
যারা এর আগেও কুঠারের বদলে জল নিয়ে এসেছিল?
নাকি তারা যারা আরো আরো চারা বুনে দিয়েছিল?
মহীরুহ হবার জন্যে যারা একদা জল ঢেলেছিল
কিংবা যারা গড়ানো রক্ত তুলে নিয়ে সাহসী মানুষের মতো
দাঁড়িয়েছিল নির্বিকল্প বৃক্ষমানবের মতো
তারা বনসাই হবার বদলে সুনসান নদী হয়ে গেল।
যারা গিয়েছিল
যাদের ঘন্টা বাজাবার কথা ছিল
তারা ঘন্টা না বাজিয়ে চলে গেল মুখ নিচু করে।
প্যারাম্বুলেটরে চড়ে যেসব শিশু গিয়েছিল
তারা ফিরে গেল হামাগুড়ি দিয়ে।
কথাচ্ছলে যারা বলেছিল দামোদর পার হয়ে যাবে
তারা কলার ভেরুয়া সাজাতেই পার করে দিল গোধূলি
যারা বলেছিল নাচের আড়ালে লুকিয়ে ছায়ানট হবে
তারা সব হাঁটু গেড়ে বসেছিল কাদা ও মাটিতে।
তবু অগোচরে হাতির শুঁড়ের মতো মেঘ নেমেছিল
ভেজা হাওয়া আর বৃষ্টিতে ধুয়ে গিয়েছিল পাপারাজ্জির ছবি
যারা গিয়েছিল তারা ফিরেছিল কাকভেজা হয়ে
একটি মেদুর স্বপ্নে যারা বুঁদ হয়েছিল
তারা স্বপ্নভঙ্গের শোক নিয়ে ঢুকেছিল গভীর টানেলে।
কবি তমিজ উদ্দীন লোদীর কবিতা
কেমন লেগেছে তা কমেন্ট করে জানান।
আরও কবিতা পড়ুন:
নুসরাত নুসিনের কবিতা আমরা দুজনে রক্তমর্মর ভাঁটফুল
মাহমুদুল হাসান ফেরদৌসের তিনটি কবিতা