ডা. আকাশের আত্মহত্যা, অপরাধী কি স্ত্রী ডা. তানজিলা হক মিতু??

ডা. আকাশের আত্মহত্যা

ডা. আকাশের আত্মহত্যা:

ডা. আকাশের আত্মহত্যার অপরাধী কি স্ত্রী ডা. তানজিলা হক মিতু? 


অনেকেই বলছেন, এক হাতে তালি বাজে না। কেউ বলছেন, পুরুষরা যদি ঘরে বউ রেখে একাধিক নারী সংশ্রবে যেতে পারে তবে বউরা তা করলে স্বামীদের এত লাগে ক্যান? অনেকেই আবার মেয়েটার সাথে কিভাবে কি কি করা উচিৎ তার নানান অশ্লীল প্রস্তাবনা পেশ করছেন।

একটি আত্মহত্যাকে নিয়ে যথারীতি আমরা নারীবাদী ও পুরুষবাদী পেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে গেছি। অথচ বিষয়টা চলতি আইনে বা সামাজিক প্রথায় অপরাধ কি অপরাধ নয়, সেটাই মূখ্য হওয়া উচিৎ ছিল।

আইন ও প্রথা পাল্টাতেই পারে। তবে যতক্ষণ পাল্টাচ্ছে না ততক্ষণ বিষয়টাকে আমি এভাবে দেখছি যে, একটা সম্পর্ক (বিয়ে অথবা প্রেম অথবা লিভ টুগেদার) থাকাকালীন অন্য সম্পর্কে জড়ানোটা যে কোন দেশেই, যেকোন সমাজেই অপরাধ বা অন্যায় হিসাবে বিবেচিত হয়। সুতরাং মেয়েটি অপরাধ করেছে, এটা প্রথম কথা।

২য়তঃ এই অপরাধের উষ্কানী হিসাবে ছেলেটারও কোন অপরাধ, যেমন মেয়েটার উপরে শারীরিক নির্যাতন বা ছেলেটার অন্য কোন মেয়ের সাথে সম্পর্ক ইত্যাদি ছিল কিনা অথবা ছেলেটা কি নপুংসক ছিল, যার কারণে মেয়েটা বহুগামী হয়েছে? এই সব বিবেচনাও আসতেই পারে।

তবে ছেলেটার যদি এই জাতীয় কোন সমস্যা থেকেই থাকে তবে মেয়েটি ছেলেটাকে ডিভোর্স দিয়ে নিজের মত করে জীবন চালাতেই পারত। ৩৫ লক্ষ টাকা মোহরানার যে ইস্যু, সেটা তো মেয়েটার ডিভোর্স দেয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা নয়। এটা ছেলেটার ডিভোর্স দেয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা।

তাহলে সে ডির্ভোস দিল না কেন? ছেলেটা খুব পাওয়ার ফুল? ডিভোর্স দিলে মেয়েটাকে জানে মেরে ফেলবে? তাই যদি হত, তবে তো বউয়ের একাধিক পরকীয়ার কথা শোনার পরপরই ছেলেটা সেটা করতে পারত। ছেলেটার আত্মহত্যাই প্রমাণ করে যে ছেলেটার মেয়েটাকে বড় কোন শাস্তি দেয়ার সামর্থ্য ছিল না।

ভিতরের কথা স্পষ্ট করে আমরা কেউই জানি না। যতটুকু প্রকাশ পেয়েছে তার ভিত্তিতেই আমার এই বিশ্লেষন। সব শেষে যে সব মেয়ে বলছে ছেলেরা যদি বহুগামী হতে পারে তবে মেয়েদের হতে সমস্যা কি, তাদের বলব, না, কোন সমস্যা নেই। তবে সেক্ষেত্রে বহুগামীতাকে সর্বজনীন করতে হবে। মানে এরপর থেকে কোন পুরুষ বহুগামী হলে সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না বা অপরাধ ভাবা যাবে না। সেই সাথে মেয়েটাও বহুগামীতা করে যাবে। অর্থাৎ, সেক্ষেত্রে কারো বহুগামীতাই অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে না।

আর যদি পুরুষের বহুগামীতায় আপনাদের ঘোর আপত্তি থাকে তবে, তুমি অধম, তাই বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন? এই ফরমুরায় আসেন এবং পুরুষদের গুষ্টি উদ্ধার করতে থাকেন। সব ধরনে বহুগামীতার বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষনা করেন।

অপরদিকে যে সকল বীর পুরুষরা কোন কোন স্টাইলে মেয়েটাকে কি কি করা উচিৎ তার বর্ননা দিয়ে যাচ্ছেন, তাদের বলব, মেয়েটার বহুগামীতা নিয়ে যখন এতই ক্ষেপছেন তখন সেই মেয়েটার সাথে সেক্স করার খায়েশ কি আপনাকেও একই অপরাধে অপরাধী করছে না। নাকি সেক্সটাকে আপনি অপরাধের শাস্তি হিসাবে দেখছেন? সেক্স যদি কোন শাস্তি হয়, তো সকল ধর্ষকই দাবী করতে পারে এই মেয়েকে আমি ঐ সামাজিক অপরাধের শাস্তি দেয়ার চেষ্টা করেছি।

ভাইজানেরা, মেয়েটাকে যদি শাস্তি দিতেই চান, তো সেক্স বাদ দিয়ে অন্য যেকোন শাস্তির কথা ভাবেন। আর যদি মেয়েটার রগরগে যৌন জীবনে আপনার ইতোমধ্যেই উত্তেজনা চলে আসে, তো সরাসরি ভদ্র ভাষায় নিরিবিলিতে মেয়েটার সাথে সেক্স উপভোগ করার প্রস্তাব দেন। মেয়েটা রাজি হলেও হতে পারে। কিন্তু আল্লাহর দোহাই লাগে সমাজের রক্ষকের মুখোশের আড়ালে মেয়েটার শরীর হাতানোর ফ্যান্টাসী কইরেন না।

সব শেষে বলব, আত্মহত্যা কোন সমাধান নয়, বরং তা এক ধরনের কাপুরুষতা।


ডা. আকাশের আত্মহত্যা নিয়ে কমেন্টে আপনার মতামত লিখুন


আরও পড়ুন: 

#MeToo: বাংলাদেশে মিটু আন্দোলন, এতদিন কেন মেয়েরা মুখ খোলেনি?

যুদ্ধে শিশু ধর্ষণ, শিশু নির্যাতন কি অনুমোদিত?

Share this

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top